ধর্ষণের মামলা মীমাংসায় বাদীর ওপর চাপ
রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় এক পোশাককর্মীকে গণধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করতে বাদীপক্ষের ওপর আসামিপক্ষ চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসামিপক্ষ এ জন্য বাদীপক্ষকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকিও দিচ্ছে।
বাদীপক্ষের অভিযোগ, এ চাপের কথা জানানো হলেও পুলিশ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র অনুযায়ী জানা যায়, গত গত ১৪ এপ্রিল তারা স্বামী-স্ত্রী এক আত্নীয়ের সাথে দেখা করার জন্য রিকশাযোগে দারুস সালাম থানার লালকুঠিতে নির্মাণাধীন এক বাড়িতে যান। যিনি নির্মাণাধীন ওই বাড়িটির নিরাপত্তাকর্মী। কিন্তু তারা সেখানে ওই আত্মীয়কে পাননি। স্ত্রীকে রিকশায় বসিয়ে রেখে কিছু দূরে এক বাসায় ওই আত্মীয়কে খুঁজতে যান স্বামী। এ সময় মুন্না, মো. জাবেদ ও মো. শহীদুল নামের স্থানীয় তিন যুবক ওই পোশাককর্মীকে রিকশা থেকে জোর করে নামান। রিকশাওয়ালা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন ওই যুবকেরা। পরে পোশাককর্মীকে নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যুবকেরা ধর্ষণ করে ফেলে যান।
ওই পোশাককর্মী মিরপুরের স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার স্বামী এক সরকারি কর্মকর্তার গাড়ি চালক।
এ ঘটনায় পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ ওঠে। পোশাককর্মীর স্বামীর বিভিন্ন তদবিরের মুখে দুদিন পর পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়। মামলায় ওই তিন যুবককে আসামি করা হয়। বাদী হন ধর্ষণের শিকার ওই পোশাককর্মী। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের প্রতিবেদন পাওয়ার পর চলতি বছরের ২৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বর্তমানে এ মামলায় আসামি মুন্না ও জাবেদ গ্রেপ্তার আছেন। তারা কারাগারে। আরেক আসামি শহীদুলকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পোশাককর্মীর স্বামী বলেন, শহীদুল এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথচ তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মীমাংসা করতে শহীদুল তাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। একবার পথে পেয়ে তাকে (পোশাককর্মীর স্বামী) ধাওয়া করেছিলেন শহীদুল।
পোশাককর্মীর স্বামী অভিযোগ করেন, শহীদুল হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। গ্রেপ্তার হওয়া মুন্নার পরিবারের সদস্যরা দেখাচ্ছেন অর্থের লোভ। আদালতে গিয়ে মুন্নাকে নির্দোষ বলতে চাপ দিচ্ছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘এখন আমি আতঙ্কের মধ্যে আছি। এসব চাপের কথা আমি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তার কথা, তিনি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। এখন আর তার কিছু করার নেই।’
অভিযোগ অস্বীকার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল আলম।
তিনি বলেন, কেউ হুমকি-ধমকি দিলে বাদীপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন। আসামি শহীদুল পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও আসামি শহীদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আসামি মুন্নার যে স্বজন অর্থের লোভ দেখিয়ে মীমাংসার চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তার মোবাইল ফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।