- হোম
- >
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
- >
- ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে স্থাপনের জন্য উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত পর্যায়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে স্যাটেলাইট সিস্টেম ক্রয়ে ফ্রান্সের মহাকাশ সংস্থা থ্যালেস এলনিয়ার সঙ্গে ১,৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বুধবার ( ১১ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিটিআরসি ও ফ্রান্সের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দাবায়ে রাখা যাবে না। আজকে এই চুক্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৭টি স্যাটেলাইট মালিক দেশের ক্লাবে প্রবেশ করল। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এগিয়ে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে দেশের স্যাটেলাইট চ্যানেল, ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ট্রান্সপন্ডার ভাড়া বাবদ প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়। যা বিদেশীদের আমাদের দিতে হয়। এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর আমাদের আর কোনো খরচ হবে না। বরং ৬-৭ বছরের মধ্যে এই বিনিয়োগের পুরো অর্থ উঠে আসবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। এই ইতিহাসের অংশ হতেই আমি এই অনুষ্ঠানে এসেছি।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফিয়া ওবার্টও উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড.শাহজাহান মাহমুদ শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘আজকের দিনে বাংলাদেশ ইতিহাসের নতুন দিগন্তে প্রবেশ করলো। আজকের দিন থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর ১৯৫টি দেশের মধ্যে স্যাটেলাইটের মালিক দেশগুলোর গৌরবময় কাতারে প্রবেশ করলো। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তবে রূপ নিল।’
ড. শাহজাহান মাহমুদ আরও বলেন, ‘এই স্যাটেলাইট একটি আঞ্চলিক স্যাটেলাইট হিসেবে কাজ করবে। তারপরও সার্কভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনও এর আওতায় আসবে। আপনারা দোয়া করবেন, যাতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়।’
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় স্থান নির্ধারণও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
ফ্রান্সের থ্যালেস এলেনিয়া স্পেসের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জ্যঁ লইক গ্যাল শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য গৌরববোধ করছেন বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বে এখন বিস্ময়। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা অংশীদার হতে পেরে গৌরববোধ করছি।’
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেম ক্রয়ের লক্ষ্যে ১ হাজার ৯শ ৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেন। ক্রয় কমিটি অনুমোদন দেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা বিডার্স ফিন্যান্সিং এর মাধ্যমে সংকুলান করা হবে।
ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পের আওতায় এ বছরের ১৫ জানুয়ারি রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল এর কাছ থেকে ২১৮.৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ অরবিটাল স্লট লিজ ইন এর ভিত্তিতে ক্রয় করা হয়েছে। এরও আগে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ২০১২ সালের ২৯ মার্চ বিটিআরসি ও যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনার ইন্টারন্যাশনাল এর মধ্যে পরামর্শ সেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।