চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার খন্দকিয়া গ্রামে জিন তাড়ানোর নামে ভণ্ড ওঝার হাতে আতিক উল্লাহ চৌধুরী আফিপ (৮) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। রবিবার গভীর রাতে এ ব্যাপারে হাটহাজারী থামায় মামলা দায়েরের পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

নিহত আফিপ হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের মো. তবিউল্লাহ চৌধুরীর ছেলে। সে স্থানীয় প্রিমিয়ার পাবলিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।

অভিযুক্ত ওঝা রুজি আক্তার ওরফে বাছু (৩০)। তিনি হাটহাজারী উপজেলার খন্দকিয়া এলাকার দিদার হাজীর বাড়ির মো. ইলিয়াছ ওরফে মনু মিঞার স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বুধবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে হঠাৎ করে শিশু আফিপের পেটব্যথা শুরু হয়। আফিপের মা তাকে রুজি আক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। 

এ সময় ওঝা রুজি আক্তার জানান, আফিপকে জিনে ধরেছে। জিন তাড়ানোর নামে আফিপকে পানি, একটি লাল জবা ফুল ও কয়েক খোসা কাঁচা রসুন খেতে দেন ওঝা। কিছুক্ষণ পর আফিপকে ঠান্ডা পানিতে গোসল করিয়ে তার আসন ঘরে নিয়ে বসানো হয়। ঝার-ফুঁকের নামে ওই দিন বিকেল থেকে পরের দিন বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টা পর্যন্ত আফিপকে আসন ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওঝা আসন ঘর থেকে এসে জানান, আফিপকে জিনে মেরে ফেলেছে।

নিহত আফিপের মা রোজী আক্তার বলেন, ‘ওই কবিরাজ (ওঝা) আমার ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। চিকিৎসার নামে ঠান্ডার মধ্যেও গোসল করিয়েছে। কাঁচা রসুনসহ নানা কিছু খাইয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। কবিরাজ নিকটাত্মীয় হওয়া মামলা করতে দেরি হয়েছে।’

আফিপের মা আরো জানান, ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে রবিবার দুপুর থেকে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। পরে স্থানীয়দের চাপে গভীর রাতে পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়। মামলা নং ১৮ (০৮.১১.২০১৫)

হাটহাজারী থানার ওসি ইসমাইল বলেন, ‘কবিরাজের (ওঝা) হাতে এক শিশু নিহতের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’