গাইবান্ধার সাংসদ লিটনের ছোড়া গুলিতে আহত শিশু শাহাদাত আজ সোমবার ( ২৬ অক্টোবর) দুপুরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে। বেলা আড়াইটার দিকে রংপুর থেকে নিজবাড়ি সুন্দরগঞ্জে পৌঁছায়। এ সময় তাঁকে দেখতে ভিড় জমায় এলাকাবাসী।

বাড়িতে রওনা হওয়ার আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাকা হয় গণমাধ্যমকর্মীদের। এ সময় শাহাদাত সাংবাদিক ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাড়িতে হাসিমুখে দাওয়াত দেয় শাহাদাত।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে মা-বাবার সঙ্গে বাড়ির দিকে রওনা দেয় শাহাদাত। অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে পুলিশের গাড়ি ছিল।

অনেক দিন পর বাড়ি ফেরাতে শাহাদাতের আজ অনেক আনন্দ। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সে সবুজ শার্ট পরে বাড়ি যাচ্ছে। কিছুটা ভয়ও অবশ্য আছে। রওনা হওয়ার আগে হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের শাহাদাত বলে, হামার এমপি যাতে আর কোনো ঘটনা ঘটপার না পারে, সে জন্য আপনেরা হামার খোঁজ নেবেন।

শাহাদাতের মা সেলিনা বেগম বলেন, অনেক দিন পর বাড়ি যাচ্ছি। তাই ভালো লাগছে। তবে বাড়িতে কতটা নিরাপদে থাকবো তা নিয়ে একটু চিন্তিত। বাবা সাজু মিয়ার মুখেও হাসি। ছেলেকে তিনি ফুটবল ও খেলনা গাড়ি কিনে দিয়েছেন।

শাহাদাত এখন কারও সাহায্য ছাড়াই ভালোভাবে হাঁটতে পারছে। সে অনেক দিন বাঁচতে চায়। তাই দোয়া করতে বলল সবাইকে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের আদর-যত্নে সুস্থ হয়ে উঠেছে সে। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আসাদুজ্জামান তাকে দুটো হরলিকস কিনে দিয়েছে। আরও দুটি হরলিকস চাইল শাহাদাত।

হাসপাতালের পরিচালক আ স ম বরকতুল্লাহ বলেন, শাহাদাত এখন পুরোপুরি সুস্থ। তাঁর কক্ষেই সংবাদ সম্মেলন হয়।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শিশু শাহাদাতের চিকিৎসার ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব সময় খোঁজ নিয়েছে। বাড়ি যাওয়ার পরও প্রতি সপ্তাহে অথবা ১৫ দিনে একবার তাকে দেখবেন চিকিৎসকরা। শাহাদাতের পরিবার যেকোনো প্রয়োজনে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। তাঁদের যোগাযোগ করার জন্য নম্বর দেওয়া হয়েছে।

পরিচালকের কক্ষে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী লাইজু, শাহাদাতের চিকিৎসক শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বাবলু কুমার সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শাহাদাতের চিকিৎসক বাবলু কুমার সাহা বলেন, শাহাদাত এখন পুরোপুরি সুস্থ। সে এখন হাঁটতে পারে। আশা করা যায় দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সে আগের মতো দৌড়ঝাঁপ দিতে পারবে। তার পেশিতে গুলির ক্ষত ধীরে ধীরে সেরে যাবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।