কৈশোরে হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া যেন হয়ে উঠে কিশোর-কিশোরীদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্জন। অনেক সময় লাইসেন্স ছাড়াই দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীরা ড্রাইভিং সিটে বসতে সংকোচ করছে না। এই বিষয় সংক্রান্ত সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, আমাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক ড্রাইভিং নিয়ে আরও গভীর গবেষণা করতে প্রভাবিত করেছে।

গত বছর পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, সড়ক দুর্ঘটনা থেকে ১৫৩.০০০টি মৃত্যু দেখে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের চিন্তায় প্রশ্ন উঠে, যে কিশোর-কিশোরীদের গাড়ি চালানো নিয়ে কতটা আস্থা থাকা উচিত। গাড়ি বেচাকেনার সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম কারমুডি দুর্ঘটনার তথ্য এবং কৈশোর মস্তিষ্ক উন্নয়নের স্নায়ুবিজ্ঞান পরিক্ষা ও গবেষণা করে বাংলাদেশে গাড়ি চালানোর আইনি বয়স আসলে কত হওয়া উচিত তা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে।

বিশ্ব ব্যাংকের ডাটা দেখায় যে ৮৫% সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে উদীয়মান দেশগুলোতে এবং তা থেকে ৫০% আনুমানিক মৃত্যু এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে হয়। ফিলিপাইন্স ন্যাশনাল পুলিশ ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসের ভেতর ১১ হাজার সড়ক দুর্ঘটনা রেকর্ড করেছে যার মধ্যে ৮৭.২% চালকের ভুলের কারণে ঘটেছে। মিয়ানমারে ২০১৩ সালে ১৩৯০৭টি মৃত্যু বা আঘাত জড়িত দুর্ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশ, গাড়ি চালানোর জন্য আইনি বয়স ১৮ নিয়েও ঈদের সময়ের প্রথম সপ্তাহে ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু দেখেছে।

কিশোর চালকেরা প্রায়ই মারাত্মক বিপর্যয় জড়িত হয়। এমনকি বিপর্যয়ের হার ১৬ বছরের চালকদের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ ১৮ ও ১৯ বছরের চালকদের সঙ্গে তুলনা করলে এবং এই হার ২০ বছরের ওপর চালকদের চেয়ে তিনগুণ বেশি।

ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট (এনএইচআই) গবেষণা করে বের করেছে যে মানব মস্তিষ্কের যেই অংশটি ঝুঁকি ও আবেগপ্রবণ আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ২৫ বছর বয়সের আগে পুরোপুরি বিকশিতই হয় না। নিউক্লিয়াস একামবেন্স, যেটি তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি শৈশব থেকে বৃদ্ধি পায় ও কৈশোরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছিয়ে এরপর থেকে ছোট হয়ে আসতে থাকে।

কৈশোর মস্তিস্কের জন্য আনন্দ ও তৃপ্তি ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে দাঁড়ায়। কিশোর-কিশোরীদের ঝুঁকির আচরণে নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে, তারা ড্রাইভিং বিষয়টি আরও হালকাভাবে নেয় ও ফোন চেক করা, ইত্যাদি গাড়ি চালানোর মাঝে অনায়াসে করতে থাকে। ম্যাসেজ করা বা ফোন করা বিপর্যয়ের তিনগুণ ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলে।

কিশোর-কিশোরীদের হাতে গাড়ির চাবি না দেওয়া রাস্তায় বিপর্যয়ের সমাধান না। বাবা-মা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গাড়ি চালাতে গিয়ে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপদ রাখার জন্য। নিরাপদ যানবাহনের পাশাপাশি মোবাইল ফোন ও সিটবেল্টের ব্যবহার সম্বন্ধে তাদের সতর্ক করা উচিত ও তাদের নিজেদের গাড়ি চালানোর পদ্ধতি নিয়েও সচেতন হওয়া উচিত।

ছোট ছোট অভ্যাস উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে বললেন কারমুডি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জয়াও পেডরো প্রিন্সিপে।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পরে কারমুডি বর্তমানে বাংলাদেশ, ক্যামেরুন, কঙ্গো, ঘানা, ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কাতার, রুয়ান্ডা, সৌদি আরব, সেনেগাল, শ্রীলঙ্কা, তাঞ্জানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, এবং জাম্বিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই অনলাইন গাড়ির প্ল্যাটফর্ম ক্রেতা, বিক্রেতা এবং যানবাহন ব্যবসায়ীদের গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং বাণিজ্যিক যানবাহন খুঁজে পেতে সাহায্য করে।