টাঙ্গাইলে শেষ মূহুর্তের প্রতিমার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে প্রতিমা শিল্পীরা। শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে টাঙ্গাইল জেলায় এবার ৭ শতাধিক মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জেলা শহরে গুটি কয়েকটি মন্ডপ ছাড়া বাকীগুলো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। অধিকাংশ পূজা মন্ডপ তৈরি হয়েছে টাঙ্গাইল পৌরসভা এলাকায়। সবচেয়ে বেশি পূজা হচ্ছে ঘাটাইল উপজেলায়।

শেষ তুলির আচর দিতে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা। মনের সবটুকু মাধুরী ঢেলে রাঙ্গিয়ে তুলছে মা দূর্গাকে। শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের দেবী দূর্গা। দুষ্টের দমন শিষ্ট্রের পালন বিশ্বব্যাপী মঙ্গল ধ্বনি বয়ে যাক, মহাশক্তি ত্রিনয়নী এমন প্রত্যয়ে বার্তা নিয়ে আসছে লোকালয়ে মা দূর্গা। এক কার্তিক ১৪২২ বঙ্গাব্দ। আগামি ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ সোমবার দেবীর ঘোটকে আগমন, ৪ কার্তিক ১৪২২ বঙ্গাব্দ, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ইং বৃহস্পতিবার বিজয় দশমির মধ্য দিয়ে দেবী দোলায় গমন করবে। মা দূর্গা দেবীর পদতলে ভক্তিস্তরে পুষ্পাঞ্জলি দেবতার অমিয় প্রত্যাশায় আয়োজন করতে যাচ্ছে শারদীয় দূর্গাৎসবের টাঙ্গাইল জেলা শাখা। দেবীর বোধনের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ মহোৎসব শুরু হতে যাচ্ছে। চলবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

তাই প্রতিমা ও এর প্রত্যেকটির অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ লক্ষ করা যাচ্ছে টাঙ্গাইলে কর্মব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীদের। জানাতে চাইলে আদালত পাড়া পূজা সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ শাহা লিটন বলেন, গত এক মাস ধরে প্রতিমা তৈরি শুরু করছেন। কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন প্রতিমাগুলোর নকশা করা হচ্ছে। আর শীগ্রই শুরু হবে রঙের কাজ। প্রতিমাগুলোতে রঙ লাগিয়ে সুসজ্জিত করা হবে বলে জানান তিনি। আর প্রতি বছরের ন্যায় আদালত পাড়া পূজা সংসদের এবার মোট বাজেট ২০ লক্ষ টাকা। পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে আতশ বাজির ফুটিয়ে উদ্বোধন করবেন আদালত পাড়া পূজা সংসদ।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় উৎসব দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পাল বাড়িতে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট প্রতিমা। পারিবারিকভাবে যারা পূজা উদযাপন করবেন তারা এসব প্রতিমা ক্রয় করছেন। অন্যদিকে সার্বজনীন দূর্গা পূজার প্রতিমা তৈরির জন্য দেশ বিদেশের প্রতিমা কারিগর এসেছেন প্রতিমা তৈরি করতে।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটি জানান, দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল পূজা উদযাপন হয় টাঙ্গাইলে। আসন্ন দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিনের মধ্যেই রঙের কাজ শেষ হবে। 

সরকারি সহযোগীতার ব্যাপারে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পূজা মন্ডপের তালিকা স্ব-স্ব উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবছর চাউলসহ আর্থিক অনুদান পেয়ে থাকে এসব পূজা মন্ডপে।

এদিকে উৎসাহ উদ্দীপনা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে টাঙ্গাইল সদর সহ সবকয়টি উপজেলায় এরই মধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ষষ্টিপূজা অর্থাৎ দেবীর বোধনের আগের দিন থেকে ২২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের রাত পর্যন্ত এ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতিমা ও মন্ডপ তৈরি থেকে প্রতিমা স্থাপন পর্যন্ত সব কার্যক্রম ও আচার-অনুষ্ঠান যেনো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারেন সে ব্যাপারে সচেতন রয়েছে জেলা উপজেলা প্রশাসন।