চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়ারিয়া আতঙ্কে ৫০ জন হাসপাতালে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় অসচেতনতার কারণে ও দূর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে পানিবাহিত জীবানু আক্রান্ত হয়ে খালে আলমপুর সহ কয়েকটি গ্রামে ডায়রিয়া আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০/৬০ জন রোগী স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান হয়েছে।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিনদিনে উপজেলার খালেআলমপুরসহ কয়েকটি গ্রামে অসচেতনতার কারণে ও দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে পানিবাহিত জীবানুতে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়ায় খালেআলমপুর গ্রামসহ সুরানপুর, মুশরীভূজা, ময়ামারী ও মুন্সিগঞ্জের প্রায় ৫০/৬০জন নারী পুরুষ ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা অনুকুলে আসলেও কিছু শংকা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিশেষ করে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকদের যথাযথ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।
উপজেলার খালেআলমপুর গ্রামে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহসান হাবিব,ডা. মেহফুজ ও হেল্থ ইন্সপেক্টর আব্দুস সবুর জানান , হঠাৎ এ ধরণের ডায়রিয়া মহামারী আকার ধারণ করার জন্য ঐ সমস্ত এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের অসচেতনতাই দায়ী। নইলে হঠাৎ করেই ৫০ অধিক রোগীর ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা নয়। কারণ বর্তমানে মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচেতন। তবে এলাকাগুলিতে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের জন্য টিউবওয়েলের পরিমান যথেষ্ট নয়।
এখন সরকারী উদ্যোগে ঐ এলাকা গুলিতে টিউবওয়েল বসানো হলে এ ধরণের পরিস্থিতি এড়ানো যাবে। খালেআলমপুর গ্রাম থেকে আসা ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশ আনসুর আলী জানান, আমাদের গ্রামে কয়েকটি পুকুরের ময়লা ও দূর্গন্ধযুক্ত পানি গোসলসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার এবং দু’চারটি কুপ(কুঁয়া)’র পানি খাবার কারণে এ অবস্থার শিকার হয়েছে গ্রামবাসী। সরকারের নিকট ঐ পুকুর ও কুপগুলি একেবারেই বন্ধ করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিস্থিতি দেখার জন্য ছুটে যান উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি রোগীদের সাথে কথা বলেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের পরিস্থিতির শিকার যেনো হতে না হয়, সে জন্য গ্রামগুলিতে দ্রুত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের দেখার জন্য হাসপাতালে পরিদর্শন এবং তাদের খোঁজ-খবর নিয়ে পানিকে বিশুদ্ধ করার ও ব্যবহারের সঠিক পন্থা অবলম্বনে বিস্তারিত আলোচনার পর তিনি খালেআলমপুর গ্রামের কয়েকটি পুকুর ও কুপ ব্যবহারের অনুপযোগি হওয়ায় তা বন্ধের জন্য ও সাথে লাল পতাকা টাঙ্গানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত মো. রফিককে জানান।
তিনি আরো বলেন, এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় সরকারী হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারদের বলা হয়েছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মশিউর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে আগে থেকেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং একটি মেডিকেল টিম পর্যায়ক্রমে সার্বক্ষণিকভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এলাকাগুলিতে কর্তব্যরত রয়েছে। তবে তিনি ঐ সমন্ত এলাকার ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষের সচেতনতার অভাব আর কয়েকটি কুপ(কুঁয়া) ও পুকুরের পানি ব্যবহারের জন্য এ অবস্থা সৃষ্টি বলে জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।