- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- বিএনপি থেকে আ.লীগ হয়ে যাওয়া চেয়ারম্যানের ভয়ে নিরাপত্তাহীন হিন্দু পরিবার
বিএনপি থেকে আ.লীগ হয়ে যাওয়া চেয়ারম্যানের ভয়ে নিরাপত্তাহীন হিন্দু পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
প্রিন্টঅঅ-অ+
পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে মাস্টার্স পাশ করে ঢাকায় শিক্ষাকতা পেশায় কর্মরত হিন্দু পরিবারের সন্তান বহ্নি বেপারী।
একই আবেদনের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌদ্দ দল এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম, এলজিইডি’র সচিব, ডিজিএফআই এর মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পুলিশ এর মহাপরিদর্শক, এনএসআই মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পুলিশ এর স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত-মহাপরিদর্শক, উপ-মহাপরিদর্শক, বরিশাল রেঞ্জ, বাংলাদেশ পুলিশ, মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানসহ বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি বরাবরে প্রেরণ করেছেন।
ওই আবেদন পত্রে তিনি (বহ্নি বেপারী) লিখেছেন, তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান হাওলাদার ও তার ছেলে শামীম হাওলাদার ক্ষমতার দাপটে তুষখালী ইউনিয়ন একের পর এক হিন্দু পরিবারের জমি দখল, ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করাসহ নানা প্রকার অপকর্মের সাথে যুক্ত। একই সাথে তাদের পরিবারের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ তাঁর ভাইকে জেলহাজতে রেখেছে। এবং বিপুল পরিমান চাঁদার দাবি করেছে। বাপ-ছেলের চাহিদা পুরণ না করতে পারলে দেশ ছেড়ে চলে যেতেও হুমকি দিয়েছে।
বহ্নি বেপারীর দেওয়া আবেদন থেকে জানা যায়, তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান হাওলাদার মুক্তিযুদ্ধের আগে পেশায় নৌকার মাঝি ছিল। এ সময় তার সাথে গৌরাঙ্গ সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর পরিচয় হয়। একসময় গৌরাঙ্গ সাহার সাথে শাহজাহান হাওলাদারের সুসম্পর্ক ও বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর শাহজাহান হাওলাদার ভয়ভীতি দেখিয়ে গৌরাঙ্গ সাহা সহ আরো অনেক হিন্দু পরিবারকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।
এছাড়া তুষখালী ইউনিয়নের ধোপা বাড়ি এলাকার চল্লিশ থেকে পয়তাল্লিশ জন হিন্দুদের ভয়ভীতি, মিথ্যা মামলা, হয়রানি সহ দেশত্যাগে বাধ্য করে তাদের জমি-জমা দখল করে নেয়। শাহজাহান হাওলাদার ও তার পরিবারের যত সম্পত্তি আছে তার বেশিরভাগই হিন্দুদের থেকে জোড় করে দখল করে নেওয়া। অপরদিকে যতীন ও অনীল হালদারের জমি দখল করে শাহজাহান হাওলাদার এর স্ত্রীর নামে ‘মমতাজ কিন্ডার গার্টেন’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলেছে।
ওই আবেদন পত্র থেকে জানাগেছে, মুক্তিযুদ্ধের পরপরই শাহজাহান হাওলাদার বিভিন্ন এলাকার ইউপি সদস্য (মেম্বর), চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে চোরাইগম কিনে অন্যত্র বিক্রি করত। এরপর ধীরেধীরে ভারত-বাংলাদেশ নৌপথে চোরাকারবারি শুরু। এরপর টাকার বিনিময় মুক্তিযুদ্ধের সনদপত্রও কিনে নেয়। ২০০১ সাথে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে সে বিএনপিতে যোগ দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে হাত করে চেরাকারবারির ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু তৎকালীন পিরোজপুর-৩ (ভাণ্ডারিয়ার একাংশ ও মঠবাড়িয়া) আসনের বিএনপি সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ড. রুস্তম আলী ফরাজী তার চোরাকারবারী ব্যবসায় বাধা দেয় এবং বাবা ও ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এবং উদ্ধারকৃত মালামাল স্থানীয় জনগণের মাঝে বিলিয়ে দেয়।
জেল থেকে বের হয় বাবা ও ছেলে আলাদা ব্যবসা শুরু করে। ২০০৬ সালে নির্বাচনে আ.লীগের বিজয় সুনিশ্চিত দেখে দলপাল্টে আ.লীগ যোগ দিয়ে নেতা হয় যায়। এবং আ.লীগ দলীয় সাংসদ প্রার্থী ডা. আনোয়ারের পক্ষে কাজ শুরু করে। নির্বাচনে বিজয়ের পর পুরস্কার স্বরূপ শাহজাহান হাওলাদারকে তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দেয়। অর্থ ক্ষমতা আর স্থানীয় প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। এরপর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আরো চড়াও হতে শুরু করে। নৃপেন দেবনাথ নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজনের জমি দখল করে নিজের বর্তমান বাড়ি তৈরী করেছে। তাঁদের (হিন্দু সম্প্রদায়) দখলকৃত সম্পদ দিয়ে ঢাকায় ২টি বাড়ি, দোকান, বরফকল, রাইস মিল, ইটের ভাটাসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ তৈরী করেছে।
ওই আবেদন পত্র থেকে জানাগেছে, শাজাহান হাওলাদার চেয়ারম্যান হবার পর তার পুরোনো বিএনপির সঙ্গীদের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। এখনও সে বিএনপি-র হয়েই কাজ করে। তার ছেলে শামীম হাওলাদার এলাকায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত। পিতা শাহজাহান হাওলাদার পুত্র শামীম হাওলাদারের বিরুদ্ধে একসময় নারী নির্যাতনের মামলা করেছিলো, সেই মামলায় সে জেলও খাটে। উল্লেখ্য শামীম হাওলাদার দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করার জন্য প্রথমা স্ত্রীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। (শাহজাহান হাওলাদারেরও ঢাকা-তুষখালী মিলিয়ে একাধিক স্ত্রী রয়েছে।)
এই শামীম তার পিতা শাহজাহান হাওলাদার চেয়ারম্যান হওয়ার পর স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার দুলাল জমাদ্দারকে সঙ্গী করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই দুলাল জমাদ্দারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর, জাতির জনকের ছবি, প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ জাতীয় পতাকার অবমাননার একাধিক মামলা রয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে, শালিসের নামে অর্থ আদায়, চাঁদাবাজি এখন শামীম হাওলাদার ও দুলাল জমাদ্দারের মূল ব্যবসা। এলাকার হিন্দুরা তাদের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত। টাকা না দিলে তারা থানা-পুলিশের ভয় দেখায়। অর্থের বিনিময়ে পুলিশ লেলিয়ে তারা জনগণের ওপর অত্যাচার করে।
বর্তমানে চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার, তার ছেলে শামীম হাওলাদার এবং মেম্বার দুলাল জমাদ্দার-এর নজর পড়েছে আমাদের পরিবারের দিকে। তারা নানা রকম মিথ্যা মামলা, হুমকি দিয়ে আমাদের জমিজমা দখল করে দেশছাড়া করানোর পায়তারা করছে। পুলিশ-প্রশাসনকে টাকা ও ক্ষমতার জোরে তারা হাত করে রেখেছে। এদের প্ররোচণায় রাত একটা-দু’টার সময়ে আমাদের তুষখালীর বাড়িতে এসে হয়রানি করছে। আমার বড় ভাই সুমন বেপারী অনেকদিন পুলিশ ও চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার, তার পুত্র শামীম হাওলাদার এবং মেম্বার দুলাল জমাদ্দার-এর ভয়ে বাড়িতে আসতে পারেনি। রাত দু’টায় পুলিশ বাড়িতে এসে আমার ভাইয়ের স্ত্রী বীণা রানী দত্ত-র হাত থেকে মুঠোফোন কেড়ে নেয় যেন সে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে। বারবার বাড়িতে পুলিশ এসে টাকা-পয়সা দাবি করছে, নয়তো এরেস্ট-মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এদের ভয়ে প্রতিবেশিরাও আমাদের সাহায্য করতে আসতে পারছে না। আমাদের পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
দুবার স্ট্রোকের পর প্রায় চলৎশক্তিহীন আমার বাবা দীপক চন্দ্র বেপারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান হাওলাদার-এর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলায় তিনি (শাহজাহান) বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে মিটমাট করে ফেলেন। আপনি কিছু টাকা দেন, আমিও কিছু দেই। সে কিন্তু ছেলে ভালো না পরে কিছু হলে এর দায়দায়িত্ব আমি নেব না।’
বহ্নি বেপারী জানান, সুবিচারের আশায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমার ভাইয়ের স্ত্রী, তুষখালী ইউনিয়ন মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক বীণা রানি দত্ত, মামা মণি মণ্ডল ও কাকাতো ভাই শিশির বেপারীকে নানারকম অপমান করে এবং সরাসরি শামীম হাওলাদার-শাহজাহান হাওলাদার-দুলাল জমাদ্দারের পক্ষ নিয়ে কথা বলে।
বহ্নি বেপারীর আবেদন পত্রে সংযুক্ত করা বিভিন্ন থানা পুলিশের আবেদন পত্র থেকে দেখা যায়, গত আগস্ট মাসে শামীম তাঁর ভাই সুমন বেপারীর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মিথ্যা বয়ানে একটি জি ডি করে এবং তদন্ত কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো. সহিদুল ইসলাম যথাযথ তদন্ত ছাড়াই সুমন বেপারীর বিরুদ্ধে থানায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। সাব-ইন্সপেক্টর মো. সহিদুল ইসলাম এরজন্য বিশ হাজার টাকা নিয়েছে বলে শোনা গিয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনের ১ নম্বর স্বাক্ষী ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার দুলাল জমাদ্দারকে সুমন বেপারী প্রশ্ন করলে সে বলে,‘ আমি এসবের কিছু জানি না।’ একটি অনলাইন পত্রিকা থেকে প্রশ্ন করা হলে দুলাল জমাদ্দার সাংবাদিককে অন দ্য রেকর্ড আবারও একই কথা বলে। যা কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
এর ফলে শামীম ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন বেপারী এবং তার বন্ধুস্থানীয়দের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এমনকি একজনকে শারীরিক অত্যাচার করে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার ঘটনাও ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে শামীম তাঁকে (বহ্নি বেপারী) ফোন করে বলে, ‘যে সাংবাদিক এসব কথা লিখেছে সে জীবনে মস্ত বড় একটা ভুল করল। নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনল।’
এরই মধ্যে শামীম হাওলাদার পাঁচ-ছ’বার আমাকে ফোন করেছে এবং নানারকম ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এর ফলে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে শঙ্কিত হয়ে আমি গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। ওইদিন বিকেলে (জিডি করার পর) শামীম আমাকে আবারও ফোন করে।
তার (শামীম) মূল বক্তব্য, আমি যেন আমার ভাইকে কোনরকম আর্থিক সহযোগিতা না করি, বরং মামলা লড়তে যে টাকা খরচ হবে সে টাকাটা সালিশীর মাধ্যমে তাকে দিয়ে দিই। তাহলে সে মামলা তুলে নেবে। তারও অনেক টাকা-পয়সা খরচ হচ্ছে। তাকে টাকা না দেওয়া হলে সে এমন ব্যবস্থা নিতে পারে যাতে আমার ভাই হয় প্রাণে বাঁচবে না, নয়তো আমার পরিবারকে ভিটে-মাটি ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হবে।
একই দিনে শামীম-এর পিতা (শাহজাহান) আমার পিতাকে বলে, ‘আপনারা ভারতে গেলেও সেখানে গিয়ে মোকাবেলা করার ক্ষমতা আমি রাখি।’ আমার পরিবার ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভূক্ত (হিন্দু) হবার কারণে হিন্দুবিদ্বেষী শাহজাহান চেয়ারম্যান ও তার পুত্র শামীম হাওলাদার আমাদের উচ্ছেদ করে জমিজমা দখলের পায়তারা করছে। এরসঙ্গে যুক্ত রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার দুলাল জমাদ্দার।
আবেদন পত্র থেকে দেখা গেছে, বহ্নি বেপারীর করা সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে তদন্তকারী অফিসার মোহাম্মদপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর আবুল খায়ের ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে তদন্ত করতে এসে তাঁকে জানায়, শামীমকে ফোন করা হলে সে বলেছে, আমাকে সে কোন ফোন করেনি। বহ্নি বেপারী তদন্তকারী অফিসারকে কল লিষ্ট দেখালে সে (আবুল খায়ের) বলে, ‘এসব তো খরচের ব্যাপার; আপনি খরচ করতে প্রস্তুত থাকলে আপনার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে আমাকে জানান। নয়তো এরকম জিডি অনেক হয়। সবগুলোর তদন্ত করা সম্ভব হয় না। সেগুলোর মত আপনারটাও পড়ে থাকবে।’
বহ্নি বেপারী জানান, শামীম আমার মাকেও ফোন করে নানা ভয়ভীতি দেখায়, শামীম ও দুলাল এমনকি চেয়ারম্যান শাহজাহানও লোক মারফত এবং সামনাসামনিও নানা হুমকি দেয়। আমার ভাই নিরাপত্তার কথা ভেবে এত হয়রানির পরেও কোন মামলা বা জিডি করার সাহস করেনি। কিন্তু আমার মা উদ্বিগ্ন হয়ে স্থানীয় (মঠবাড়িয়া) থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে থানা থেকে এর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় যাতে অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে প্রকাশিত হয়েছে।
বহ্নি বেপারী আরো জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মঠবাড়িয়া ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আমার ভাই সুমন বেপারীর বিরুদ্ধে শামীম হাওলাদারের করা মামলার শুনানি ছিল। ওইদিন বিজ্ঞ আদালতের রায়ে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। ম্যাজিট্রেট কোর্ট থেকে দফায় দফায় টাকা-পয়সা দাবি করলেও সুমন বেপারীর জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে গরিমসি করেছে। আবার কোনো আইনজীবী যেন আমার ভাইয়ের জন্য কাজ না করে, এমনকি পিপি যেন তার দায়িত্ব পালন না করেন তার ব্যবস্থা করারও চেষ্টা করেছে ফলে তার জামিনের জন্য আবেদন করতেও অনেক দেরি হয়েছে। শামীম হাওলাদার জেলহাজতেও তার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে।
বহ্নি বেপারী আরো জানান, আমার পিতা-মাতা দু’জনই অসুস্থ। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য আমার ভাই (সুমন) এসমস্ত হয়রানির কারণে ব্যবসা বা কাজে সময় দিতে পারছে না। অন্যদিকে মামলার খরচ চালাতে গিয়ে তার আর্থিকভাবে এবং মানসিকভাবেও ভেঙ্গে পড়েছে। এরইমধ্যে মামলার জন্য আমাদের জমিও বিক্রি করতে হয়েছে। আমার ভাই সুমন বেপারী বর্তমানে জেল হাজতে বিনা অপরাধে অনিশ্চিত-মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। আমার পরিবার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। মামলা চালানো বা জামিনের চেষ্টায় ছুটবে, এমন লোকও আমার পরিবারে নেই। এদিকে চেয়ারম্যান নানা জায়গায় ফোন করে, কথা বলে তার প্রভাব খাটাচ্ছে। শামীম আবারও আমার বাবা-মাকে ফোন করে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি চাকরিজীবী বিধায় সব সময় গ্রামে উপস্থিত হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারছি না। আবার নিজেকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচয় দেওয়া প্রভাবশালী শামীম বছরের একটা দীর্ঘ সময় ঢাকায় (এয়ারপোর্টের কাছাকাছি) দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে থাকে। ফলে আমি স্বামী-সন্তান নিয়ে ঢাকাতেও নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আইন বারবার অন্যায়কারীর প্রভাব-প্রতিপত্তি আর আর্থিক সঙ্গতির পক্ষ নিচ্ছে। কোথাও সুবিচার-নিরাপত্তা পাব, তার আশা নেই। এমতাবস্থায় দেশত্যাগ ছাড়া আমার পরিবার সামনে আর কোন পথ দেখতে পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান হাওলাদার এর সাথে ঢাকা অফিস থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।