গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত ধামরাইয়ে খামারিরা
সোহেল রানা, ধামরাই
প্রিন্টঅঅ-অ+
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। উপজেলায় ১৫০টি খামারে ৫ হাজার ২১৫টি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর এ উপজেলার অনেক ব্যবসায়ী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে ঈদের আগে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
উপজেলার কুল্লা, কেলিয়া, নান্নার, সূয়াপুর, আমতা, খরারচর, বালিয়ার মানুষ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবাদি পশু পালন করে স্বল্প সময়ে লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধামরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ও পৌর এলাকায় ১৫০টি খামারে ৫ হাজার ২১৫টি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে।
এ নিয়ে কথা উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতির খামারি জাহাঙ্গীর আলম জানান, একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বছর তিনেক পূর্বে তিনি দেশী জাতের ৩টি গরুর বাচ্চা (বাছুর) ক্রয় করে মোটাতাজা করার পদ্ধতি গ্রহণ করেন। প্রথমবারে বেশ লাভের মুখ দেখে পরবর্তী ২ বছর এভাবে গরু মোটাতাজা করে কোরবানির বাজারে বিক্রি করে লাখপতি হয়ে গেছেন। এ বছর তার খামারে মোটাতাজাকরণের আওতায় রয়েছে ১৩টি গরু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ক্রসিং পদ্ধতি ও দেশী জাতের গরু মোটাতাজা করা হয়। হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু থেকে ক্রসিং পদ্ধতিতে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেশী জাতের গাভীকে প্রজনন করানো হয়। সেই বাচ্চাকে কৃমিনাশক বড়ি খাইয়ে অথবা ইনজেকশন দিয়ে রোগমুক্ত করা হয়। খৈল, ভূষি, চালের ক্ষুদ দিয়ে ভাতের মতো রান্না করে খাওয়ানো হলে সুঠাম দেহ গড়ে ওঠে। এর একেকটি গরুতে ৬ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত ওজন হয়।
দেশী জাতের গরুকে প্রথমে কৃমিনাশক বড়ি খাইয়ে অথবা ইনজেকশন দিয়ে রোগমুক্ত করা হয়। এরপর ভিটামিন জাতীয় ইনজেকশন পুশ করে খড়-কুটা খাবারের পাশাপাশি খৈল, ভূষি, চালের ক্ষেুদ দিয়ে ভাতের মতো রান্না করে ভাতের মার, সবজি তরকারির খোসা, পরিত্যক্ত জায়গায় সৃজিত কচু সিদ্ধ করার মাধ্যমে বিষমুক্ত করে খাওয়ানো হলে সুঠাম দেহ গড়ে ওঠে। এর একেকটি গরুতে ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৫ মণ পর্যন্ত ওজন হয়।
১৫ বছর পূর্বে দৈনিক গোশতের গড় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ মেট্রিক টন থেকে বর্তমানে মোটাতাজাকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে দৈনিক গোশতের গড় উৎপাদনের পরিমাণ হয়েছে ৯ লাখ মেট্রিক টন। এ ছাড়াও একই পদ্ধতিতে বর্তমানে দৈনিক দুধ উৎপাদন গড় দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন।
এর দ্বারা খামারিরা একদিকে লাভবান এবং অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা হচ্ছে। দেশে খাদ্য ও পুষ্টির জোগান দিচ্ছে। এমন গুরর গোশত এবং দুধে মানবদেহে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।