হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমি: আদর্শ শিক্ষার অনন্য উদাহরণ
মিসু সাহা নিক্কন, লক্ষ্মীপুর
প্রিন্টঅঅ-অ+
কালো প্যান্ট-সাদা শার্টে ছাত্র। ছাত্রীদের মাথায় স্কার্ফ, সাদা-সবুজের সেলোয়ার-কামিজ। সকালের সমাবেশে মাঠে দেড় হাজার শিক্ষার্থী। নীরবতা, কোরআন তেলোয়াত, গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা উত্তোলন; সম্মান প্রদর্শন। দেশ ও জাতীর সেবায় শপথ। সমাবেশ শেষে সারিবদ্ধ হয়ে সবাই স্ব স্ব শ্রেণি কক্ষে গমন। এমনই নিয়ম-শৃঙ্খলায়, নৈতিক ও প্রকৃত শিক্ষার অনন্য উদাহরণ হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমি।
এ উচ্চ বিদ্যালয়টি লক্ষ্মীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি কমলনগর উপজেলা সদর হাজিরহাটের প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত। ১৯৫৮ সালে ৬ একর ৮৪ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আবুল খায়ের এমএ। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। চুক্তিভিত্তিক ৮ জনসহ রয়েছেন ২২ জন শিক্ষক।
শিক্ষার পরিবেশ, সৃজনশীলপাঠ দান, অনুশিলন ও শিক্ষকদের স্নেহ ও আন্তরিকাতায় এখানে বিকোশিত হচ্ছে জ্ঞানের আলো। এখন এটি মেধাবী শিক্ষার্থী গড়ার কারখানা।
হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমীতে শিক্ষাকার্যক্রম শুধুমাত্র পাঠ্য পুস্তকে সীমাবন্ধ নয়। এর বাইরেও সাহিত্য ও সংস্কৃতি যেমন- সাধারণ জ্ঞান, উপস্থিত এবং নির্ধারিত বক্তৃতা, বির্তক, সংগীত, আবৃত্তি, হামদ-নাত ইত্যাদিতে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবার চেয়ে এগিয়ে।
এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজের পৃথক ব্যবস্থা। হিন্দু ছাত্র ছাত্রীরা সরস্বতী পূজা উদযাপন। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনসিসি, স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম চোখে পড়ার মত। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণসহ রয়েছে বিজ্ঞানাগার, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অনুপাতে অনুমোদিত শাখা ও শিক্ষক সংকট। এখানে জলবল কাঠামোতে প্রতিবন্ধকতা। দ্বিতল ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সম্প্রসারণ জরুরী হয়ে পড়েছে। পর্যাপ্ত মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের অভাব। শিক্ষার্থী হারে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও শিক্ষা উপকরণ অপ্রতুল।
জানা যায়, নৈতিক ও প্রকৃত শিক্ষার অর্জনের জন্য দুরদুরান্তের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমিতে পড়াচ্ছেন। এতে করে গত কয়েক বছরে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে এখন দুই সিফট চালু করা প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
হৃদমা, ফাহাদ, শাওনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের সন্তানের ন্যায় স্নেহ করেন। আদর-ভালোবাসা দিয়ে পড়া আদায় করে নেন। শিক্ষকদের যথাযথ পাঠদানের কারণে ক্লাসেই পড়া আয়াত্তে চলে আসে। তবে ছাত্র-ছাত্রী বেশি হওয়ায় শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে কষ্ট হয়।
অভিভাবকরা জানান, সময়ের প্রয়োজনে বিদ্যালয়ে পর্যপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেণিকক্ষের সম্প্রসারণ ও আগামী শিক্ষাবর্ষে দুই সিফট চালু করা জরুরী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে এখানে শিক্ষকরা আন্তরিক। বিদ্যালয়ের ভালো ফলাফল এর প্রমান। সাফল্য ধরে রাখতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট খায়ের এজাজ মাসউদ বলেন, আমার বাবা মরহুম আবুল খায়ের এমএ হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিদ্যালয়টি জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান থেকে জ্ঞান অর্জন করে অনেকই এখন দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।