নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু গোপন ফাইল প্রকাশ হচ্ছে
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসনের হেফাজতে থাকা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত যাবতীয় গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে উদ্ধৃত করে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মানিকতলা মোড়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) অফিসের মহাফেজখানায় ফাইলগুলো রাখা থাকবে। আগামী শুক্রবার থেকে সাধারণ মানুষ তা দেখতে পারবে।
গত শতকের মাঝামাঝিতে অন্তর্ধানের পর থেকে রহস্যে ঢাকা নেতাজী সংক্রান্ত গোপন ফাইলের সংখ্যা ৬৫। এর মধ্যে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের (এসবি) কাছে আছে ৫৫টি ফাইল।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বলেন, ভাবতে অবাক লাগে, আমরা তার জন্মদিন জানি, মৃত্যুদিন জানি না। আদৌ মারা গেছেন কি না, সেটাও জানি না।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসে নেতৃত্ব দেওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আজাদ হিন্দ ফৌজ গড়ে জাপানের সঙ্গে ভিড়ে ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে সশস্ত্র লড়াইয়ে নামা সুভাষ বসুর পরিণতি কী হয়েছে, তা এখনও অজানা। আর এ নিয়ে রহস্যজাল ছড়িয়েছে গত অর্ধ শতাব্দীজুড়ে।
বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে বলে একটি কথা প্রচলিত থাকলেও তারও কোনো অকাট্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি কেউ।
গোপন ফাইল প্রকাশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ইতিহাসবিদ, সাবেক এমপি সুগত বসু বলেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। তথ্য জানার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হল। আমি সংসদেও বলেছি, ৫০ বছরের পুরনো সব তথ্য ও নথি প্রকাশ্যে আনা উচিত। অনেক দেশ আজকাল তারও আগে নথিপত্র জনসাধারণের জন্য বের করে দিচ্ছে।
আজাদ হিন্দ ফৌজের কুচকাওয়াজে সুভাষ বসু সুগত তার ‘হিজ ম্যাজেস্টিজ অপোনেন্ট’ বইয়ে লিখেছেন, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়েছে।
নেতাজির মৃত্যুরহস্যের অনুসন্ধানে গঠিত শাহনওয়াজ কমিশন, খোসলা কমিশন এবং মুখোপাধ্যায় কমিশন নিয়ে আলোচনাও ছিল তার বইয়ে।
একমাত্র মুখোপাধ্যায় কমিশন বলেছিল, নেতাজির মৃত্যু সনদ (ডেথ সার্টিফিকেট) নেই। তাইওয়ান সরকারের বক্তব্য ছিল, ওই দিনে বিমান দুর্ঘটনার কোনো রেকর্ড তাদের হাতে নেই।
সুগত লিখেছেন, ঘটনার দুদিন আগে জাপান আত্মসমর্পণ করে, ফলে তখন তাদের অধীনে থাকা তাইওয়ানও ছিল টালমাটাল। বিমান দুর্ঘটনার নথি না-ই থাকতে পারে।
মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আদর্শিক বিরোধ নিয়েই দুই মেয়াদে কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন বাঙালি সুভাষ বসু। গান্ধীর অহিংসার পরিবর্তে তিনি ছিলেন সশস্ত্র লড়াইয়ের পক্ষপাতি।
পরে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। স্বাধীনতার প্রশ্নে তার আহ্বান ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের আজাদী দেব’ আজও স্মরণ করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইঙ্গ-মার্কিন জোটের বিরুদ্ধশক্তি জাপানের সহযোগিতা নিয়ে ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ গঠন করে ভারতে স্বাধীন করতে যুদ্ধে নেমেছিলেন সুভাষ বসু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান-জার্মানের পরাজয়ের পর তার হদিস আর মেলেনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।