রাজাপুরে বিষখালির ভাঙন রোধের দাবিতে স্মারকলিপি
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্টঅঅ-অ+
ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালির ভাঙনের হাত থেকে মানকি সুন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাইক্লোন সেল্টার, বাজার, লঞ্চঘাট, রাস্তা ও বিভিন্ন বসতঘর রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ৬ শতাধিক এলাকাবাসী।
ভাঙন কবলিত এলাকা মানকি সুন্দর লঞ্চঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ক্ষতিগ্রস্থ এলকাবাসী ও ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা।
মানবন্ধনচলাকারে বক্তব্য রাখেন মোস্তফা কামাল সিকদার, মজিবর ফকির, দেলোয়ার হোসেন, নাসরিন আক্তার শিরিন ও সিফাত জাহান সুক্তি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পূর্ণিমার জোয়ারে পানি বৃদ্ধির পর পানি কমতে শুরু করার সাথে সাথে এ এসব এলাকার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের কবলে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, রাস্তা, ফসলী জমি ও উপকূলীয় বনভূমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে মানকি সুন্দর স্কুল, সাইক্রোন সেল্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিষখালী নদী তীরবর্তি পুকুরীজানা থেকে বাদুরতলা পর্যন্ত ৫শ মিটার, চল্লিশ কাহনিয়া থেকে উত্তরপালট পর্যন্ত ৫শ মিটার, নাপিতের হাট থেকে মানকি সুন্দর পর্যন্ত ৫শ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ফোরকান, দেলোয়ার, সুলতান, হাসেম, লুৎফর, কুদ্দুস ও ইউসুফ জানান, গত কয়েকদিনের দিনে ১০-১২ জনের জমি-বসতভিটা, তিনটি রেইন্ট্রি গাছ ও ইটের সোলিং দেয়া বেরিবাধের রাস্তার কিছু অংশসহ অনেক গাছ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ১ শ’ বছর ধরে চলছে এ ভাঙনের খেলা। মানকি গ্রামের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধ করা না গেলে সুন্দর গ্রামটি বিলীন হতে বেশি সময় লাগবে না।
তাই অতি দ্রুত বেরিবাধ নির্মাণ করে সুন্দর গ্রামটি, মানকি সুন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাইক্লোন শেল্টারটি রাক্ষসী নদীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসি।
মানকিসুন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবছরই নদীর ভাঙনের ফলে এলাকার কয়েক শ’ বাসিন্দা ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে ভাঙনের কবলে প্রায় দৈর্ঘ সাড়ে ৪শ ফুট এবং প্রস্থ আড়াই শ ফুট বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মানকি সুন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাইক্লোন সেল্টার। ৩০-৪০ গজ দুরে ভাঙন চলে এসেছে। যে কোন সময় ওই স্থাপনা দুটি রাক্ষসী বিষখালী নদী গ্রাস করে নিবে।
জেলা প্রশাসক রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়ার মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাইনুল ইসলাম জানান, ভাঙনকৃত এলাকা মেপে স্টিমিট করে মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে। জাপানী জাইকা প্রজেক্টের লোক এসে ভাঙনকৃত এলাকা মেপে এবং ছবি তুলে নিয়েছে। কিন্তু আমরাও অপেক্ষায় আছি কখন বাস্তবায়ন হবে।
জেলা প্রশাসক রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া স্মারকলিপি প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, ঝালকাঠি নদী বিধৌত একটি জেলা। জেলার ৯ হাজার ৬শ ৬১ মিটারের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই তারা ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কাঠালিয়ার একটি এলাকার ভাঙন রোধে বরাদ্দ আসছে। পর্যায়ক্রমে সব জায়গারই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।