- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- ঝালকাঠিতে আমন বীজতলা পামরী পোকা মুক্ত
ঝালকাঠিতে আমন বীজতলা পামরী পোকা মুক্ত
মোঃ রাজু খান, ঝালকাঠি
প্রিন্টঅঅ-অ+
ঝালকাঠি জেলায় আমন মৌসূমে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। এর ৩৩ হেক্টর জমির বীজতলায়ই পামরী পোকা আক্রমন করেছিল। প্রতিবিঘা জমিতে ৪ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ হবার পরে বীজতলায় আশংকাজনক হারে পামরী পোকার আক্রমন হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিল কৃষক। জেলা কৃষি বিভাগের পামরী পোকামুক্ত করার জন্য দেওয়া পরামর্শ কৃষকরা অনুসরণ করায় এখন পুরো জমিই পামরী পোকা মুক্ত রয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এবছর আমন মৌসূমে ধান উৎপাদনের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৬ হাজার ২শ ৪৩ হেক্টর জমি। এ জমিতে আবাদের জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭শ ৫ হেক্টর। বীজ উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ঝালকাঠি সদর উপজেলায় ১ হাজার ১১ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে বীজতলা তৈরী হয়েছে ১ হাজার ৩শ ৬৫ হেক্টর জমিতে। নলছিটি উপজেলায় ৯শ ৬৭ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে বীজতলা তৈরী হয়েছে ১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। রাজাপুর উপজেলায় ৯শ ৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে বীজতলা তৈরী হয়েছে ১ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে। কাঠালিয়া উপজেলায় ৮শ ২২ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে বীজতলা তৈরী হয়েছে ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে।
নলছিটি উপজেলার প্রতাপ ব্লকের কৃষক সিরাজ গাজী, শাহা গাজী, আলফাজ গাজী, আবতার মাঝি ও লিয়াকত মাঝি জানান, ইতিপূর্বে শুনেছি বিভিন্ন স্থানে পামরী পোকা আমন বীজতলা আক্রমন করেছে। কিন্তু আমরা নিরাপদে ছিলাম। ১৫/১৬ দিন পূর্বে অল্প অল্প করে আমন বীজের মাথা সাদা হতে দেখে তেমন গুরুত্ব দেই নাই। ১ দিনে মাথায় জমিতে এসে দেখি অর্ধেকাংশের মাথা সাদা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ তালুকদারের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি এসে পরিদর্শন করেন। আমাদেরকে বীজের মাথা কেটে (ক্লিপিং করার) পরামর্শ দেন। কিন্তু আমরা একটু অপেক্ষা করে রোববার সকালে দেখি বীজতলার সম্পুর্ণ এলাকার মাথা পামরী পোকার আক্রমনে সাদা হয়ে গেছে। যে জমিতে বেশি আক্রমন হয়েছে সেখানে ক্লিপিং পদ্ধতি ব্যবহার এবং যেখানে কম আক্রমন হয়েছে সেখানে মেশিন না থাকায় বালতিতে ঔষধ গলিয়ে খেজুর গাছের পাতার সাহায্যে দিয়েছি।
কৃষক শাহা গাজী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ৩ বিঘা জমির দেড় বিঘাতেই আমন বীজতলা করেছি। তাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। কিন্তু বীজতলা পামরী পোকা আক্রমন করায় বীজের মাথা কেটে (ক্লিপিং পদ্ধতি ব্যবহার) ফেলায় পামরী পোকার আক্রমণ মুক্ত করেছি। আমাদের ঔষধ প্রয়োগের জন্য কোন মেশিন না থাকায় হাত দিয়ে অথবা খেজুর পাতার সাহায্যে জমিতে দিতে হয়।
প্রতাপ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ তালুকদার বলেন, নিয়মিত ব্লকের সব কৃষকের সাথেই যোগাযোগ রাখছি। পামরী পোকার আক্রমনের পর প্রতিকারের বিষয়ে তাদেরকে পরামর্শ দিলে তারা তা একটু দেরিতে করায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। তারপরে ক্লিপিং পদ্ধতিতে পামরী পোকা মুক্ত করে বীজতলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আমন বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ হেক্টর জমির বীজ পামরী পোকায় আক্রমন করেছিল। আমাদের পরামর্শ নিয়ে কৃষকরা কাজ করায় পামরী পোকা মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।