সুরাইয়ার রাতভর কান্নায় আনন্দিত তার মা
সুরাইয়ার রাতভর কান্নায় তার মা আনন্দিত। কারন জন্মের পর থেকে এভাবে আর কখনও কাঁদেনি সুরাইয়া।
সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত বড় মানুষের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে ফুলিয়ে কেঁদেছে সুরাইয়া। মা হিসেবে কিছুটা খারাপ লাগলেও আমরা বেশ আনন্দিত।’
মাগুরা সদরের বাড়ি থেকে এভাবেই মোবাইলে সুরাইয়ার কথা বলছিলেন গর্ভে গুলিবিদ্ধ এই শিশুটির মা নাজমা বেগম।
তিনি বলেন,‘সোমবার দুপুরে টিকা দেওয়ার জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার দুই পায়ে ও বাম হাতে টিকা দেন ডাক্তাররা। সেখান থেকে বাড়িতে ফেরার পর থেকেই থেমে থেমে শব্দ করে কাঁদছে সুরাইয়া।’
কিছুক্ষণ বাদে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর আবারও কান্না, রাতভর ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদেছে সে। জন্মের পর হাসপাতালে কিংবা বাড়িতে এর আগে কখনও শব্দ করে কাঁদেনি এই শিশুটি।’
‘সন্তান কান্না করলে মায়ের তো খারাপ লাগেই, তবে এই খারাপ লাগার মধ্যেও একটা আনন্দ ছিল। আমার মেয়ের এমন কান্না শুনে পরিবারের সবাই খুশি, উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললন নাজমা।
নাজমা বেগম মঙ্গলবার (০৮ সেপ্টেম্বর) যখন মোবাইলে কথা বলছিলেন, তখন সুরাইয়া তার কোলেই ছিল। মোবাইল কানে ধরিয়ে সুরাইয়ার ‘আও…আও’ কান্নাও শোনালেন তিনি।
বললেন, টিকা দেওয়ার সময়ই ডাক্তাররা (চিকিৎসক) বলেছন-কান্না করবে। তাই এনিয়ে অন্য কোনো টেনশন ছিল না।
নাজমা বেগম জানান, বর্তমান ৩ কেজি ওজন প্রায় ৪৬দিন বয়সী সুরাইয়ার। জন্মের সময় সেটা আড়াই কেজির মতো ছিল। পরে আরও কমে যায়। তবে এখন সব মিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা ভালো।
মেয়ে এবং নিজের চিকিৎসার জন্য সংবাদমাধ্যমের অনেক অবদান ছিল সুরাইয়ার মা বলেন, আপনারা আমার মেয়ে এবং আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন।
‘আসছে কোরবানির ঈদে সুরাইয়ার আকিকা অনুষ্ঠান করবো। আপনাদের সবাইকে দাওয়াত দিলাম, অবশ্যই আসবেন,’ সবশেষে বললেন সুরাইয়ার মা।
গত ২৩ জুলাই বিকেলে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় যুবলীগকর্মী কামরুল ভূঁইয়ার সঙ্গে সাবেক যুবলীগকর্মী মোহম্মদ আলী ও মেহেদী হাসান আজিবরের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়।
এসময় এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন কামরুলের চাচা আব্দুল মোমিন। আর কামরুলের বড় ভাই বাচ্চু ভূঁইয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা বেগম ও প্রতিবেশী মিরাজ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।
সেদিন রাতেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমার গুলিবিদ্ধ শিশু পৃথিবীর আলো দেখে। দুদিন পর ২৬ জুলাই ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
এ ঘটনার পর দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে দুই দফা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শিশুটির চিকিৎসা চলে।
হাসপাতালে প্রায় তিন সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে মা-মেয়ে গত ২০ আগস্ট বাড়ি ফেরেন। বর্তমানে মা-মেয়ে ভালো আছেন বলে জানালেন নাজমা বেগম।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।