- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- শিশু নির্যাতনকারী ম্যাজিষ্ট্রেট ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন
শিশু নির্যাতনকারী ম্যাজিষ্ট্রেট ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন
নির্যাতনের বিচার না পেয়ে ক্ষোভ আর ঘৃণায় সাতক্ষীরার বিচার বিভাগ, পুলিশ ও বিবেকবান মানুষদের দগ্ধ করে সদর হাসপাতাল ছেড়েছে শিশু বিথি। বিথিকে নিয়ে যাওয়া হবে বাগেরহাটের শিশু সংশোধনাগারে।
সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক নরুল ইসলাম ও স্ত্রী নাশাতার পৈশ্বাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ১৫ দিন ধরে ১০ বছরের শিশু বিথি চিকিৎসা নিয়েছিল সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। বিথির শরীরে আগের মত দগদগে গরম খুনতির স্যাঁকা ও নির্যাতনের সেই দগদগে ঘাঁ আর নেই তবে রয়ে গেছে তার সব নির্যাতনের চিহৃ।
শনিবার হাসপাতাল ত্যাগের পূর্বে তার ইচ্ছার বিষয় জানতে চাইলে শিশু বিথি জানায়, লেখাপড়া শিখে পুলিশ হতে চায় সে। শাস্তি দিতে চাই নির্যাতনকারীদের। আর শিশুদের যারা নির্যাতন করবে তাদের নিজের হাতে শাস্তি দিতে চাই।
বিচারক নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাতাশা বেগম পায়ে ধরে ছিল তার। যেন নির্যাতনের কথা পুলিশ বা অন্য কাউকে না বলে। এ কারণে ভয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করার পর প্রথমে কিছুই বলেনি।
বিথির বাবা গোলাম রুসুলকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার বড়আমিনিয়া গ্রাম থেকে ডেকে এনে একটি অভিযোগ লিখে নিলেও সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি।
৩০ আগষ্ট দ্বিতীয় দফায় রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বীথির বাবা পুনরায় সাতক্ষীরা থানায় মেয়ের উপর বর্বর নির্যাতনের বিচার চেয়ে এজহার দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সেই এজহারটিও মামলাটি হিসেবে রেকর্ড করেনি।
এসব বিষয়ে সদর থানার ওসি এমদাদ শেখ জানান, পুলিশ ও বিচার বিভাগে দূরত্ব সৃষ্টি করে লাভ কী? যা হবার তা হয়ে গেছে। তারপরও তদন্ত চলছে। অপরাধীর শাস্তি হবে বলে দাবী করেন তিনি।
গত ১৯ অগাস্ট সাতক্ষীরার বিচারক নুরুল ইসলামের শহরের পলাশপোল এলাকার ভাড়া বাসা থেকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট নিতাই চন্দ্র সাহা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর (সার্কেল) এএসপি আনোয়ার সাঈদ, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ একত্রে সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ম্যাজিট্রটের বাসা থেকে শিশু বিথিকে উদ্ধার করে পুলিশ। কঙ্কালসার শরীর নিয়ে বিথিকে দ্রুত ভর্তি করা হয় সদর হাসপাতালে। সেখানে পুলিশ হেফাজতে চলে বিথির চিকিৎসা।
এদিকে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বিথি আর কখনও তার বাবা মায়ের কাছে ফিরে যেতে চায় না। কারণ, তার বাবা বিচারকের বাসায় কাজ করতে না দিলে তার এত কষ্ট সহ্য করতে হত না।
সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার সাঈদ জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয় আদালতে। আদালত শিশু বিথিকে সুস্থ্য হওয়ার পর বাগেরহাট শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেন।
শিশু বিথির উপর নির্যাতনের ঘটনায় মাববন্ধন, মিছিল সমাবেশ হলেও শেষ পর্যন্ত অদৃশ্য কারণে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ধরা ছোয়ার বাইরেই থেকে গেলো নির্যতনকারী সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট নরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাতাশা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।