টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে
সুনামগঞ্জে বন্যায় মানুষ বিপর্যস্ত
নূর উদ্দিন, ছাতক
প্রিন্টঅঅ-অ+
তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে হাওরাঞ্চলে ৩য় দফায় আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ী, ফসলী জমি ও বীজ তলা তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা চোখে অন্ধকার দেখেছেন।
গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বন্যা কবলিত এলাকর অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। জেলার ১০টি উপজেলার ১২ হাজার হেক্টর রোপা আমন ও বীজতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যা কবলিত সুনামগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারা বাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা, পশ্চিম পাগলা, জয়কলস, শিমুলবাগ ও বীরগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠাতে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।
দোয়ারা বাজার উপজেলার সুরমা, বাংলা বাজার, সদর, নরসিংপুর, বোগলা বাজার, লক্ষিপুর ও মান্নার গাঁও ইউনিয়নের যোগাযোগের প্রধান সড়কগুলো তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং ছাতক-দোয়ারা বাজার সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় ছাতকের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দোয়ারা বাজার।
ছাতক উপজেলার দক্ষিন খুরমা, উত্তর খুরমা, চরমহল্লা বাজার, জাউয়া বাজার, ইসলামপুর, নোয়ারাই, কালারুকা, ভাতগাঁও ও দোলার বাজার ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলে পানি বৃদ্ধিতে রোপা আমন ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। গ্রামীন রাস্তাগুলো অনেকটাই তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন নিন্মাঞ্চলের গ্রামের মানুষজন।
রবিবার সকাল থেকে ইছামতি, মাসিং, বটের নদী, গানুউড়া, খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, মরাচেলা ও চলতিসহ সব ক’টি পাহাড়ি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর উভয় তীরে ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। দোয়ারার বাংলা বাজার ইউনিয়নে বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে সবজির আকাল দেখা দেওয়ায় সবজির দ্বিগুন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
দোয়ারার সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর টিলাগাঁও রাবারড্যাম’র ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ইউনিয়নের মহব্বতপুর, বক্তারপুর, গোজাউড়া, খাগুড়া, জিয়াপুর, আলীপুর, বৈঠাখাই, গিরিশনগরসহ অন্তত ৪০ টি গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি আছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী, যাদু কাটা, ধোপাজান নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাঘাট, ফতেহপুর, পলাশ, শালুকাবাদ ও ধনপুর ইউনিয়নের ৮০টি গ্রাম। জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী, ভীমখালী, সাচনা বাজার ও ফেনারবাগ ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দী। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।