- হোম
- >
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
- >
- তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের বড়াই বেশি অর্জন সামাণ্য: আইটিইউ
তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের বড়াই বেশি অর্জন সামাণ্য: আইটিইউ
ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন বা (আইটিইউ)’র ‘মেজারিং দি ইনফরমেশন সোসাইটি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির আগ্রগতি নিয়ে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী বা উপদেষ্টাগণ যেভাবে বড়াই করছেন আসলে অর্জন সে হিসাবে খুবই সামাণ্য।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অর্জন এক পা এগোলে, দু পা পিছিয়ে যায়। ২০০৭ সালে একসেস টু ইনফরমেশন বা (এটুআই) প্রকল্পের ডামাডোলের মধ্যদিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলো বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, ই-বুক, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, ইন্টারনেট সেবার বিস্তৃতি সবশেষ থ্রিজি মোবাইল সেবা কার্যক্রম শুরু হয়।
এসব সত্ত্বেও ব্যক্তিখাতে ব্যবহার, সেবার দক্ষতা, দ্রুতগতির ইন্টারনেট, ডিজিটাল কনটেন্টের সহজলভ্যতা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ- এসবের অভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতটি অর্থনীতিতে প্রত্যাশিত অবদান রাখতে পারছে না বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
টেলিযোগাযোগ খাত বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ‘আইটিইউ’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও সেবা পৌঁছে দেওয়ার নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলই কাঙ্খিত মাত্রায় ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছে না।
গত কয়েক বছরে ব্যান্ডউইডথের মূল্য কমেছে। পাশাপাশি চালু হয়েছে ডাটাভিত্তিক থ্রিজি প্রযুক্তি। তা সত্ত্বেও ‘মেজারিং দি ইনফরমেশন সোসাইটি’ শীর্ষক আইটিইউ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ব্রডব্যান্ড সেবা নিশ্চিতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যেও অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মাত্র ৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। অন্যদিকে এশিয়ার মধ্যে থাইল্যান্ডের শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সেবা রয়েছে। একই অবস্থা মঙ্গোলিয়াতেও।
স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে, এমনকি ভুটানেরও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা তুলনামূলক অনেক বেশি, যা ৪৩ শতাংশ।
মাথাপিছু তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আইটিইউর প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের মাত্র ৫ শতাংশ পরিবারে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। একই কাতারে আছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ায় এ হার ৯৮ শতাংশ এবং জাপান, সিঙ্গাপুর ও চীনে ৮৩-৮৬ শতাংশ।
আইটিইউ’র প্রতিবেদন আনুযায়ী, এশীয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৯টি দেশের মধ্যে র্যাংকিংয়ে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের অবস্থান এক্ষেত্রে ২৯তম। আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে (আইডিআই) গড় স্কোর যেখানে ৪ দশমিক ৫৭, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সে স্কোর ১ দশমিক ৯৭।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নসূচক বিষয়ক আইটিইউর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বিশ্বের ১৬৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দেখানো হয়েছে ১৪৫ তম। আগের বছরের তুলনায় মাত্র এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছাড়া অন্যদের চেয়ে এখনো সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলংকা। তালিকায় ভুটান ১২৩, ভারত ১২৯, নেপাল ১৩১, পাকিস্তান ১৪২ ও আফগানিস্তান ১৫৫তম স্থানে রয়েছে। অবস্থানের উন্নয়ন হয়েছে ভুটান ও নেপালের আর অপরিবর্তিত রয়েছে ভারতের। শ্রীলংকার পাশাপাশি পাকিস্তানেরও অবস্থানের অবনতি ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির এ সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই তা হয়নি। ফলে গত এক-দেড় বছরে বড় কোনো অগ্রগতি ঘটেনি খাতটিতে।
বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপের (বিডিনগ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি সুমন আহমেদ সাবির বলেছেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেট খাতে উচ্চহারের করারোপ থাকায় এটি এখনো অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরেই রয়েছে। ফলে আগ্রহ থাকলেও অনেকেই মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা নিতে পারছেন না।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।