হাওরাঞ্চলের বেকার যুবকদের প্রেরণার উৎস আব্দুর রহিম
নুর উদ্দিন, ছাতক
প্রিন্টঅঅ-অ+
দোয়ারাবাজার বিস্তির্ণ হাওরাঞ্চলের একটি উপজেলা। হাওর ও বিল-ঝিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু শুষ্ক মওসুমে হাওর-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলে মাছের আকাল দেখা দেয়। তবে বর্তমান বর্ষা মৌসুমে এ অবস্থার অনেকটা অবসান হয়েছে।
উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের আব্দুর রহিম নিজেকে একজন আদর্শ মৎস্য খামারী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি এখন হাওর পাড়ের বেকার যুবকদের প্রেরণার উৎস। আব্দুর রহিম আধুনিক পদ্বতিতে ব্যাপক ভাবে মৎস্য খামার প্রতিষ্ঠা করায় এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের যেমন সুযোগ হয়েছে, অন্যদিকে মাছ চাষাবাদে তিনি নিজেও স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
একজন আদর্শ খামারী হিসাবে জাতীয় ভাবে মনোনীত হওয়ায় ইতিমধ্যে তার খামার সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. রিয়াজ উদ্দিন সরকারসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মৎস্য খামারী আব্দুর রহিম ২০০৩ সাল থেকে হাওর পাড়ে নিজের ও অন্যের জমি লীজ নিয়ে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি মোট ৩৩ একর ভূমিতে মাছ চাষাবাদ করেছেন।
নিজে ও পরিবারের লোকজন ছাড়াও অর্ধ শতাধিক লোক নিয়োজিত রয়েছে তার খামারে। মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুর পাড়ে গড়ে তুলেছেন সবজি বাগান। তার এ সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়ে সম্প্রতি এলাকার অনেক বেকার যুবক মাছ ও সবজি চাষ শুরু করেছেন।
আব্দুর রহিম জানান, প্রথমে ২০০৩ সালে খামারে মাছ চাষের পর বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। পরের বছরও একইভাবে বন্যায় মাছ ভেসে যাওয়ায় চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। তবুও হাল ছাড়েননি। বন্যার কবল থেকে খামার রক্ষার উদ্যোগ নেয়ার পর ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক প্রতিকুলতা কাটিয়ে উঠে এবং পরবর্তীতে লাভজনক হয়ে উঠতে থাকে। এখন তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন মৎস্য খামারী।
তার এ সফলতা দেখে বর্তমানে এলাকার অনেক বেকার যুবক ব্যাপক ভাবে মাছ চাষ শুরু করেছেন। তিনি আরো জানান, শুকনো মৌসুমে বিল ঝিল শুকিয়ে যাওয়ায় এলাকায় ব্যাপক হারে মাছের আকাল দেখা দেয়। তখন মাছের দামও অনেক চড়া থাকে। এ কারণেই এলাকায় খামার প্রতিষ্ঠা করে মাছ চাষ করছেন তিনি।
বর্তমানে তার মাছের খামারে দেশী রুই, কাতলা, মৃগেল, শরপুঁটি, গ্রাসকার্প, সিলভারকার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। মৎস্য ও কৃষি অধিদপ্তরের সঠিক নির্দেশনা পেলে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ ও সবজি উৎপাদন করে বাজারজাত করার তার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে।
তবে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের অবহেলিত উপজেলা দোয়ারাবাজারের অভ্যন্তরিণ রাস্তঘাটের বেহাল দশা ও স্থানীয় খাসিয়ামারা নদীতে আলীপুর বাজার সংলগ্ন সেতু না থাকায় মৎস্য ও সবজি পরিবহনসহ সর্বক্ষেত্রে ভোগান্তির শেষ নেই এখানকার মানুষের।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান আহমদ বলেন, আব্দুর রহিম হাওরাঞ্চলের একজন আদর্শ মৎস্য খামারী। তার এ সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই মাছ ও সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।