ঈদকে সামনে রেখে ঝালকাঠিতে আসছে মাদক
মোঃ রাজু খান, ঝালকাঠি
প্রিন্টঅঅ-অ+
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঝালকাঠিতে বিভিন্ন পেশার সাইনবোর্ডের আড়ালে আসছে মাদক। সবজি ও মাছের গাড়িতে এনে শহরের প্রভাবশালী যুবকরা বেচা-বিক্রি করছে। জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর দীর্ঘদিন যাবত মাদক উদ্ধারে কোন তৎপরতা না থাকায় চলতি বছরে কোন উদ্ধার হয় নি। একারণে দিন দিন মাদকের বিষাক্ত ছোবলে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
জানাগেছে, বেনাপোল থেকে সবজির গাড়িতে, মাছের পোনা সরবরাহের গাড়িতে, মালবাহী ট্রলারে এবং জাহাজে বহনকৃত মালের নীচে করে আসছে মাদক।
এছাড়াও ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম-স্বরুপকাঠির সীমান্ত এলাকা থেকে এবং গাভারামচন্দ্রপুরের কাঁচাবালিয়া এলাকায় বানাড়িপারা থেকে মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ভয়াবহ মাদকের মধ্যে বেশি আসছে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা।
পাশাপাশি রয়েছে হেরোইন ও গাঁজা। শহর ও শহরতলীর ডজন খানেক স্পটে বিনা বাধায় চলছে আমদানী করা মাদকের ব্যবসা। ব্যবসা সমূহ সরকার দলের বড় কোন নেতা পরিচালনা না করলেও ছোট পর্যায়ের পদ-পদবীধারী নেতারা এ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে মোবাইলে চলে এসব মাদক ব্যবসা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শহরের সাধনার মোড়, কাশারি পট্টি, টিএন্ডটি রোড, ফকির বাড়ি রোড, ডাক্তার পট্টি রোড, কামারপট্টি রোড, ইসলামী ব্যাংকের পিছনে (ডাকঘাটা), শেখ মুজিব সড়ক, বান্দাঘাট, তামাকপট্টি, পৌর খেয়াঘাট, মধ্য চাঁদকাঠি জালাইকর বাড়ি, পূর্ব চাঁদকাঠি বাস্তুহারা, ঝালকাঠি লঞ্চঘাটের দক্ষিন পাড়ে (নদীর ওপারে), আমিরাবাদসহ অনেক স্পটে চলে মাদকের বেচা-বিক্রি।
মাদক ব্যবসায়ীরা সাথে বহন না করে কোন নির্জন স্থানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় রেখে মোবাইলে চুক্তির মাধ্যমে লেনদেন করে। লেনদেন ঠিকমত পরিশোধ হলে জানিয়ে দেয়া হয় তার কাঙ্খিত বস্তুর স্থান। ক্রেতা সে অনুযায়ী খুজে বের করে নেন তার ক্রয়কৃত বস্তু। মোবাইলে কথা বলার সময় পার্শ্ববর্তি কেউ যাতে তার ভাষা বা টাকার অংক বুঝতে না পারে সে জন্য ইয়াবাকে বলা হয় গুটি বা বুতাম। ফেন্সিডিলকে যে কোন একটি তরকারীর নাম এবং গাঁজাকে সবজি বলে উচ্চারণ করা হয়।
টাকার পরিমাণের সময় ৫শ টাকাকে ৮ আনা এবং ১ হাজার টাকাকে ১ টাকা বলে। ৫ শ’ টাকার নীচে ২শ টাকা হলে ২, ৩শ টাকা হলে ৩ এভাবে সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে। ধরাছোয়ার বাইরে থাকতে ব্যবসায়ী, মানবাধিকার কর্মী, সংবাদ কর্মী, রাজনীতিক নেতাসহ বিভিন্ন নামে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় লোকালয়ের একটু আড়ালে ড্রেনে অথবা কোন নর্দমার দিকে তাকালেই দেখা যায় ফেন্সিডিলের খালি বোতল। খুচরা লেন দেনের সময় দেখা যায় ২ ও ৫ টাকার নতুন নোটে আগুনের হাল্কা পোড়ার দাগ।
অপরদিকে উঠতি বয়সী মাদকাসক্তরা পূর্বে এক ধরণের গাম নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করলেও তারা বর্তমানে হাতের কাছে প্যাথেডিন পাওয়ায় তা দিয়ে নেশা করছে। এতে করে দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে যুবসমাজ। ঈদ উপলক্ষে এ মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষা এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে শান্তিপ্রিয় সচেতন জনগণ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।