তলানিতে পৌঁছেছে গণজাগরণ মঞ্চের জনপ্রিয়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১৬ জুন, ২০১৫
প্রিন্টঅঅ-অ+
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামায়াত ইসলামের নিষিদ্ধের দাবিতে গড়ে ওঠা অরাজনৈতিক সংগঠন গণজাগরণ মঞ্চ দিন দিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এর মধ্যে অভিন্ন ইস্যু থাকার পর নিজের মধ্যে সংঘর্ষ-মামলা-পালটাপালটি সভাসমাবেশ তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে অনেক।
এর মধ্যে অনেকেই মনে করেন গণজাগরণ মঞ্চ এর মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এর একনায়ক মূলক মনোভাব, তাঁর আশেপাশে নতুন কিছু মুখের আগমন ও গণজাগরণ মঞ্চের পরীক্ষিত অনকে সদস্যেই এই নতুনদের কাছে লাঞ্ছিত হওয়ায় এই কোন্দলকে আরও বেশি উস্কে দিয়েছে। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যাপক সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশে দেখা গেছে করুণ অবস্থা। এ দিন হাতেগোনা কয়েকজন কর্মী নিয়ে সকালে শাহবাগে অবস্থান করতে দেখা যায় গণজাগরণ মঞ্চ এর মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে।
আজকের এ সমাবেশে উপস্থিত না হওয়া কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখার দাবিতে মঞ্চ এর মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার নিজ নামে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খোলে এবং অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করলে দু’দিন পর তা পাল্টে হয়ে যায় গণজাগরণ মঞ্চের নামে। এতে নিজেদের মধ্যে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তা আজকের সমাবেশে প্রভাব ফেলেছে।
তবে ডা. ইমরান এইচ সরকার তাঁর ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, বিরুপ আবহাওয়ার কারণে আজকের উপস্থিতির সংখ্যা কম হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৭১’এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৬ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
এই আপিল বেঞ্চের বাকি তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে মুজাহিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শিশির মনির, মুজাহিদের ছেলে আলী আহমদ মাবরুর উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে মুজাহিদের আপিল খারিজ করে ৬ নম্বর অভিযোগে বুদ্ধিজীবী হত্যার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন।
তবে ১ নম্বর অভিযোগে শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনকে হত্যার দায় থেকে খালাস পেয়েছেন মুজাহিদ। ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগে তাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ৭ নম্বর অভিযোগে ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানার বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ ও গণহত্যার দায়ে মুজাহিদকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে।
৫ নম্বর অভিযোগে ঢাকার নাখালপাড়ায় পুরনো এমপি হোস্টেলে শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদসহ কয়েকজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন এবং ৩ নম্বর অভিযোগে ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী থানার গোয়ালচামট এলাকার (রথখোলা) মৃত রমেশ চন্দ্র নাথের পুত্র রণজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটক ও নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
এ ছাড়া মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনীত ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের চতুর্থ রায় এটি। এর আগে আপিল বিভাগের রায়ের পর জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে এবং জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আপিলের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।