নিঝুমদ্বীপে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার
তাজুল ইসলাম তছলিম, হাতিয়া
প্রিন্টঅঅ-অ+
পর্যটন কেন্দ্র নিঝুমদ্বীপের আগমনী কলোনীর দিন মজুরের মেয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী (১৩) গণধর্ষণের শিকার হয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
দিনমজুর পিতা ধর্ষিতা মেয়েকে প্রথমে হাতিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়, দু’দিন পর ওখানকার ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়ায় গত রবিবার মেঘনা পাড়ি দিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করায়। মেয়েটি জেনারেল হাসপাতালের ২ নং ওয়ার্ডের ৩নং বেডে ৫ দিন ধরে গাইনী চিকিৎসক ফারজানা আকতারের চিকিৎসাধীন রয়েছে।
খবর পয়ে এ প্রতিবেদক গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে ধর্ষিতা ও তার দিনমজুর পিতার সাথে দেখা করেছেন।
ধর্ষিতার পিতার বর্ননা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষিতা মেয়েটি শতফুল বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ৪ জুন রাতে নিঝুমদ্বীপ আগমনী কলোনীর নিজ বসত ঘরে মেয়েটি একা ঘুমাচ্ছিল। পিতা কুমিল্লায় দিনমজুরের কাজ করছিল, মা তার অসুস্থ বড় মেয়ের চিকিৎসার জন্য হাতিয়া হাসপাতালে যায়। এ সুযোগে একা পেয়ে পাশ্ববর্তী সন্ত্রাসী বাকের (২২) ও তার সঙ্গী মিরাজ (২৫) ঘরের বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে মেয়েটির মুখ বেঁধে পালাক্রমে দুই ঘন্টা ধরে পাশবিক নির্যাতন চালায়।
একপর্যায়ে মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে পাশের লোকজন মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। দু’দিন পর ডাক্তারের পরামর্শক্রমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।
সন্ত্রাসীদের হুমকির ভয়ে হাতিয়া থানায় মামলা করতে সাহস পায়নি ভিকটিম পক্ষ। তবে নোয়াখালী জেলা শহরে আসার পর ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে বাকের ও মিরাজকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেছে।
হাকিম ছুটিতে থাকায় মামলাটি আদালতে উপস্থাপন হয়নি। আগামি রবিবার মামলাটি উপস্থাপন হতে পারে।
ধর্ষক বাকেরের পিতার নাম মোতাহের হোসেন। বাকের ইতোমধ্যে ওমান যাওয়ার ভিসা হাতে পেয়েছে। এ ঘটনা ঘটানোর পর সে গত পরশু বিমানের টিকেট কনফার্ম করার জন্য ঢাকায় গেছে বলে ভিকটিমের পিতা জানান।
চিকিৎসক ফারজানা জানান, ধর্ষণের প্রমান পাওয়া গেছে। মেয়েটি এখন আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ। সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু ধর্ষণেই শেষ নয়, দুই গালে, গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নরপশুদের কামড়ে ঝাঁঝরা হয়ে বিষাক্ত যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে মেয়েটি।
ভিকটিমের পিতা জানান, হাসপাতালে সব ঔষধ পাওয়া যায় না। টাকার অভাবে বাহির থেকে ঔষধ কিনতে পারছি না। আজ সারাদিনে একবেলা ভাত খেয়েছি আলু ভর্তা দিয়ে। কাল কোথায় খাবার পাব এ কথা বলে আঝোরে কাঁদতে লাগলেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।