ঝালকাঠির পশ্চিম চাঁদকাঠিতে চুন তৈরীতে বিষাক্ত ধোয়া
ঝালকাঠি শহরের পশ্চিম চাঁদকাঠি এলাকায় প্রায় দেড় শ’বছর ধরে চলছে চুন তৈরী। চুন তৈরীর পূর্ব মুহুর্তে শামুক পোড়ানোর সময় নির্গত ধোয়ার দুর্গন্ধে কয়েক লাখ জনগণের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে চুন তৈরীর কারিগররা বলছেন নির্গত ধোয়ায় কোন দুর্গন্ধ নেই এবং সামুদ্রিক প্রাণীর কিছু গন্ধ থাকলেও তাতে জনস্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় না।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, প্রায় দেড় শ’ বছর পূর্বে ঝালকাঠির ঐতিহ্যে নতুন মাত্রা যোগ করে চুন শিল্প। সুন্দরবন এলাকা থেকে সামুদ্রিক লোনা পানির শামুক ও ঝিনুক এনে এবং দেশীয় শামুক প্রক্রিয়াজাত করে শুধু মাত্র উপরের শক্ত খোসা পুড়িয়ে চুন তৈরী করা হয়। চুন তৈরীর কারখানা সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক, ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা, ঝালকাঠি সরকারী কলেজ, ছাত্রাবাস, জেলা বন অধিদপ্তর ও আবাসিক এলাকা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে, শামুক এনে পোড়ানোর সময় নির্গত ধোয়ার দুর্গন্ধে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এছাড়াও স্কুল-কলেজ এবং মাদ্রাসায় পড়–য়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
ঝালকাঠি জেলা বন অধিদপ্তরে দাপ্তরিক কাজে আসেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। তখন শামুক পোড়ানোর কাজ চলছিল। নির্গত ধোয়া এবং দুর্গন্ধে তিনি অতিষ্ট হয়ে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুকুমার বিশ্বাস এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৭ মার্চ উপপরিচালক ঝালকাঠিতে এসে সরাসরি চুন তৈরীর স্থান পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি পরিবেশ আইন ১৯৯৫ (সংশোধনী ২০১০) এর ১৫(১) এর ধারায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারা যায় মর্মে কাজ বন্ধ রেখে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য চুন তৈরীর কারিগর গৌর হরি ধরকে নোটিশ দেন। যার অনুলিপি ৪২১ নং স্মারকে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়। তারপরেও চলছে শামুক পুড়িয়ে চুন তৈরীর কাজ।
চুন তৈরীর কারিগর গৌর হরি ধরের পুত্র বিষ্ণু পদ ধর বলেন, সামুদ্রিক প্রাণির গন্ধে কোন রোগ হয় না। তাহলে সমুদ্র তীরবর্তি স্থানে বাণিজ্যিকভাবে আন্তর্জাতিকমানের শুটকি শিল্প গড়ে উঠতো না, সেটাই পরিবেশ অধিদপ্তর বন্ধ করতে পারতো। এখানের চুন ইটালিতে পর্যন্ত রপ্তানী করা হয়। দেড় শ’ বছর পূর্বের শিল্পতে এতদিনে কোন সমস্যা হলো না, সমস্যা হয়েছে ২০১৫ সালে এসে। আর বছর খানেক এ শিল্প থাকবে, তারপর নিজেরাই বন্ধ করে দেব।
ভুক্তভোগিদের দাবি, চুন শিল্প বন্ধ না করে নদী তিরবর্তি যে কোন স্থানে শিল্পের কার্যক্রম স্থানান্তর করে পরিবেশ বিপর্যয় রোধ এবং এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।