‘আমরা ৬৮ বছরের বন্দি দশা থেকে মুক্ত হলাম’
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট
প্রিন্টঅঅ-অ+
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার স্থল সীমান্ত চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর আনন্দে মেতে উঠেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার অভ্যান্তরে উত্তর গোতামারী ভারতীয় ছিটমহলে মানুষজন।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু বড়রাই নন, সেখানকার ক্ষুদে শিশুরাও আনন্দ উচ্ছাসে মেতে উঠেছেন। সকলের হাতে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। ঢাকায় আনুষ্ঠানিক ভাবে চুক্তি সইয়ের ঘোষণার পর পরেই আনন্দ মিছিল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে উত্তর গোতামারী ছিটমহলের লোকজন। এসময় তারা নরেন্দ্র মোদি জিন্দাবাদ, শেখ হাসিনা জিন্দাবাদ, মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ বলে নানা শ্লোগান দিতে থাকে।
এদিকে শুধু ওই ছিটমহলে নয় লালমনিরহাটের অভ্যন্তরেও থাকা ৫৯ টি ছিটে আনন্দেও বন্যা বয়ে যাচ্ছে। বিকালে প্রায় সবগুলো ছিটে সেখানকার বাসিন্দারা আনন্দ মিছিল করেছে।
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির লালমনিরহাট জেলার সা. সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৬৮ বছরের বন্দি দশা থেকে মুক্ত হলাম। এখন আমরা নাগরিক। আমরাও গর্ব করে বলতে পারবো আমরা বাংলাদেশী। তবে ছিটমহলের স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ নানা সমস্যা সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। তার ভাষ্য মতে, ভারতে ছিটমহলবাসীদের পুর্নবাসনের জন্য ৩ হাজার কোটি রুপিরও বেশী বরাদ্দ করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে আমাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করবেন’ এমন আশাবাদ প্রকাশ করেন ছিটমহলের নেতা আজিজুল ইসলাম।
এদিকে শনিবার হাতীবান্ধার উত্তর গোতামারী ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের সাথে কথা হয়। এসময় অনেকেই তাদের আবেগ অনুভুতির কথা জানায়।
তাদের ভাষ্য মতে, ‘বাপ-দাদারা মারা গেছেন নাগরিক অধিকার না নিয়ে। বর্তমানে অনেকের বয়স বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। এসব বয়োজাষ্ঠ্যদের ভাবনা ছিল হয়তো কোনো সুখবর না পেয়েই পূর্ব পুরুষের মতো চলে যাবে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝে উত্তরসূরিদের রেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে’। কিন্তু না অবশেষে স্থলচুক্তিটি বাস্তবে সম্পন্ন হওয়ায় খুশির শেষ নেই তাদের।
ভারতীয় ১৩৫/১ নম্বরের ওই ছিটমহলের বাসীন্দা সত্ত্বোর্ধ বৃদ্ধা ছকবার আলী বলেন, ‘ছিটমহলের নাগরিক বলে আমাদেরকে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতেও নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। স্কুলে পাঠিয়েছি মিথ্যা নামে। এতদিন ধরে কোনো ধরণের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইনি আমরা। এবার আমাদের সুদিন ফিরে আসায় আর কোন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না বলে দারুণ খুশি বৃদ্ধ ছকবর আলী।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।