- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আগামী ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মামলার ওই ১২ আসামির মধ্যে কেশবপুরের রাজাকার কমান্ডার সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া গ্রেপ্তার রয়েছেন আরও তিনজন। তারা হলেন- বিল্লাল হোসেন, আকরাম হোসেন ও ওজিয়ার মোড়ল। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গত বছরের ২৯ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরখান থেকে মুক্তিযুদ্ধকালীন শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
অন্যদিকে গত ১২ মে বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই রাতে তিন রাজাকারকে গ্রেপ্তার করে পরদিন ১৩ মে ঢাকায় ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে যশোরের কেশবপুর থানা পুলিশ। ট্রাইব্যুনাল তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা পলাতক অন্য ৮ আসামি হলেন- কেশবপুরের মো. ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, মো. আব্দুল আজিম সরদার, মো. আজিম সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, মো. লুৎফর মোড়ল, মো. আব্দুল খালেক মোড়ল এবং মশিয়ার রহমান।
রবিবার (১৭ মে) প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরে ১২ জনের বিরুদ্ধে আগামী ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে প্রসিকিউশনের আবেদনক্রমে বিল্লাল হোসেন, আকরাম হোসেন ও ওজিয়ার মোড়লকে তদন্ত সংস্থার ধানমণ্ডি কার্যালয় সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
সাখাওয়াতসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ২০০৯ সালে যশোরে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছর জুন মাসে তাকে কেশবপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে আত্মগোপন করেন।
পরে ওইসব মামলা ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১ এপ্রিল সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করার জন্য নথিভুক্ত হয়। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) আবদুর রাজ্জাক খান।
সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়ে একই অপরাধে ওই ১১ জনেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে এ মামলায় মোট আসামি হন ১২ জন। ১২ মে ট্রাইব্যুনালে বাকি ১১ আসামিরও গ্রেপ্তার চেয়ে আবেদনের শুনানি করেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ও সুলতান মাহমুদ সীমন।
সাখাওয়াতসহ ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় কেশবপুরের চিংড়া, বগা, ভাণ্ডারখোলা, নেহালপুর, হিজলডাঙ্গা, গৌরীঘোনা ও ভাল্লুকঘরসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন তারা। সাখাওয়াত কেশবপুরের রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ও অন্যরা এ বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তাদের অত্যাচার-নির্যাতনে এলাকার সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগে বাধ্য হন।
গত ২২ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের আদেশে ধানমণ্ডির সেফহোমে গ্রেপ্তারকৃত সাখাওয়াতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত সংস্থা। আবদুর রাজ্জাক খানসহ আরও দুই তদন্ত কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
সাখাওয়াত ১৯৯১ সালে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য থাকাবস্থায়ই তিনি জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত।
এরপর ২০০১ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। পরে বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এরপর এলডিপি ও পিডিপি হয়ে তিনি এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
sahos24.com | Online bangla news portal
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।