ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয় গত ২৩ মার্চ। কাজলার একটি বাসায় গোপন বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকে হত্যায় জড়িতদের কাছে ‘বড় ভাই’ হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তিসহ মোট ৮ জন উপস্থিত ছিলেন। পরে পল্লবীতে আরিফুল ইসলামের বাসায় আরও একটি বৈঠক হয়। পরিকল্পনা অনুসারে সফল হয় ‘কিলিং মিশন’।

একাধিক বৈঠকে দেখা হলেও কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীরা একে অন্যের নাম বাদে আর কোনো তথ্যই জানতেন না। মিশনে ‘স্লিপার সেল’ হিসেবে এরা কাজ করেছেন। অর্থাৎ ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত সদস্যরা ‘বড় ভাই’ বাদে আর কাউকেই চিনতেন না। ওরা নিজেদের ‘লোন উলফ’ হিসেবেই ভাবতে পছন্দ করেন, যার অর্থও দাঁড় করিয়েছেন নিজেদের মতো –‘একক মুজাহিদ’।

হত্যার পরিকল্পনা বৈঠকে অংশ নেওয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সাইফুল ইসলাম সম্প্রতি আদালতে দেওয়া জবানবন্দীতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেন।

ওয়াশিকুর রহমানকে হত্যায় জড়িতদের মধ্যে এ পর্যন্ত তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের মধ্যে শুধু সাইফুলই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দী দিয়েছেন।

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের দক্ষিণ বেগুনবাড়ির মসজিদ গলিতে গত ৩০ মার্চ ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন তিন তরুণ। তাদের মধ্যে জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম নামে দু’জনকে আটক করে জনতা। আবু তাহের নামের আরও একজন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করে ডিএমপি।

ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ব্লগার ওয়াশিকুর হত্যায় জড়িতদের মধ্যে একজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হওয়া জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলামকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা হত্যার কথা স্বীকার করলেও আদালতে জবানবন্দী দিতে রাজি হননি।

sahos24.com | Online bangla news portal