সর্বসম্মতিতে পাস হওয়ার পরও ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত বিল বাস্তবায়ন নিয়ে আবার জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যসভায় পাস হওয়া সংবিধান সংশোধনী বিলে বেশ কিছু ভুল ধরা পড়েছে। বিলের খসড়া তৈরিতে তাড়াহুড়ো করার জন্য এমন ভুলগুলো হয়েছে। যে কারণে বিলটি পাশের জন্য রাজ্যসভায় আবারো উত্থাপন করতে হবে। আগামীকাল সোমবার রাজ্যসভায় বিলটির সংশোধনী উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।

গত বুধবার সংবিধান সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় পাস হওয়ার পর লোকসভায় উত্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ভারতের সংসদীয় নিয়ম অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় অনুমোদনের পরে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়েই লোকসভায় পেশ করতে হয়। রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠানো রাজ্যসভায় অনুমোদিত বিলটিতে বেশ কয়েকটি ভুল ধরা পড়ে।

এটি ১১৯তম সংবিধান সংশোধনী বিল হলেও মূলত ভারতের সংবিধান সংশোধন হবে ১০০তম। ১১৯ হলো বিলের ক্রমিক সংখ্যা। কিন্তু রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিলে সংবিধান সংশোধনের ১০০তম সংখ্যাটি নেই। তেমনি ২০১৩ সালের ইউপিএ সরকারের সময়ের বিলটিই রাজ্যসভায় হুবহু পেশ করা হয়। সেখানে বিল পাসের সময় ২০১৫ সাল লেখা হয়নি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বিলটি রাজ্যসভায় উত্থাপনের সময় বলেছিলেন, 'ইউপিএ আমলের বিলটি দাঁড়ি-কমাসহ হুবহু পেশ করলাম।'

এদিকে ভারতের দ্য ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভুল বিল উত্থাপনের এ ঘটনায় ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ড. হামিদ আনসারি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও হতাশ। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ভুল না হয় সে বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করেছেন।

রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার যখন লোকসভায় বিলটি পাস করা হয়, তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ভুলগুলো সংশোধন করে সংশোধনী পেশ করেন। লোকসভায় সর্বসম্মতিতে সংশোধিত বিলটি পাস হয়। যেহেতু রাজ্যসভায় ভুল বিল পাস হয়েছে, তাই আগামীকাল সংশোধিত বিলটি আবার পাস করাতে হবে। এর পরই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বিলটিতে স্বাক্ষর করবেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি মস্কো সফর শেষে আগামীকাল দিল্লি ফিরবেন।

রাজ্যসভা সচিবালয় জানিয়েছে, বিলটির ভুল সংশোধনের জন্যই ভোটাভুটি করতে হবে। তাই নতুন করে বিতর্কের সুযোগ নেই। তবে বিরোধী দলগুলো সরকারের এই ভুলের সমালোচনা করতে ছাড়বে না বলে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন।