ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একটি আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি- মৃতের সংখ্যা ১৫ জনের বেশি হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার ব্রাম্মণবাড় গ্রামে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণে বেআইনি আতশবাজি কারখানার মালিক রামপদ মাইতি এবং তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, ওই কারখানায় কর্মরত অন্য নয়জন কর্মীসহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ছয়জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে রঞ্জন মাইতি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেআইনি আতশবাজি কারখানার জন্য তিনি বাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন রাম মাইতিকে। রঞ্জন মাইতি তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনুমোদনহীন কারখানা চালাতে সাহায্য করেছেন তিনি- এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

বুধবার রাত ১০টা নাগাদ এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রামবাসীরা প্রচণ্ড শব্দ শোনার পর বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কারখানার আশেপাশে মৃতদের দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্থানীয় গাছের ডালেও দেহাংশ ঝুলে থাকতে দেখা যায়। আশেপাশের বাড়িতেও বিস্ফোরণের তীব্রতায় ফাটল দেখা গেছে।

বুধবার রাত ১২টা নাগাদ পিংলা থানার পুলিশ ও দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে রাত দুইটা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। মৃতদেহগুলো মারাত্মকভাবে ঝলসে যাওয়ায় তাদের শনাক্ত করতে সমস্যায় পড়েছেন উদ্ধারকারী কর্মীরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেআইনি আতশবাজি কারখানায় বোমাও তৈরি করা হতো, এসব বোমা রাজ্যের বিভিন্নস্থানে পাচার করা হতো। পুলিশকে বারবার জানিয়েও কোনো ফল হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।

পুলিশ অবশ্য সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে বোমা বিশেষজ্ঞ এবং ফারেন্সিক পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ দল পৌঁছেছে।

এদিকে, এই ঘটনার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি’র প্রেসিডেন্ট রাহুল সিনহা।

sahos24.com | Online bangla news portal