লালমনিরহাটে এবার চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের দাম মণ প্রতি কমেছে প্রায় ৩শ’ টাকা। গত ১ সপ্তাহ আগে যে ধানের মণ ৭ শত টাকা দরে বিক্রি হতো সেই ধান গত দুই দিন ধরে ৪ শত টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ না উঠায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক। এক মণ ধান বিক্রি করে মিলছে না দুই জন শ্রমিকের মজুরি। 

প্রতি বছর নতুন ধান বিক্রির মৌসুমে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন এ দেশের প্রান্তিক চাষিরা। 

জেলার কালীগঞ্চ উপজেলার চাপারহাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক সামসুল আলী, করিম মন্ডল ও আব্বাস আলী জানান, প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ৪ শত থেকে সাড়ে ৪ শত টাকা পর্যন্ত। এক মণ ধান বিক্রি করে দুই জন শ্রমিকের দাম হচ্ছে না। 

ধান বিক্রি করতে আসা কয়েকজন কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যত মরণ এ দেশের কৃষকের। সার, বীজ ও কীটনাশক কেনার সময়ও তারা প্রতারিত হয়। আবার ধান বিক্রির সময় ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হতে হয়। 

লালমনিরহাটের ধান ও চাল ব্যবসায়ীরা জানান, ১০ দিন আগে চিকন ধানের মণ প্রতি বিক্রি হতো ৭৫০ টাকা ও মোটা ধানের মণ বিক্রি হতো ৭০০ টাকা। এখন চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা ও মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। মণ প্রতি কমেছে ৩০০ টাকা। এবং যে চাল বিক্রি হতো ২৮ টাকা কেজি দরে তা বিক্রি হচ্ছে ২২-২৫ টাকা দরে।

জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার দঃ গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম, আঃ সামাদ, আকতার আলী  জানান, এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে সেচ খরচ ৩৫০০ টাকা, চাষ বাবদ ১২০০ টাকা, ধানের চারা বাবদ ৪০০ টাকা, রোপণ ও কাটা বাবদ ২৫০০ টাকা, কীটনাশক, সার ও শ্রমিক বাবদ ৩৫০০ টাকা খরচ হয়। মোট খরচ হয় প্রায় ১১ হাজার ১শ টাকা। 

তা ছাড়া এ বছর দুই দফা ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। বিঘা প্রতি ২৭ মণ ধান উৎপাদনের পরিবর্তে এ বছর ধান হবে ১৮-২০ মণের মতো। ফলে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না।