নেপালে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ৩ হাজারের বেশী প্রাণহানীর ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও আতংকিত হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের এনাম মেডিকেল কলেজে পড়তে আসা দেশটির শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে গতকাল থেকেই তাদের চোখে মুখে দেখা দিয়েছে হতাশা আর উদ্বেগের ছাপ। অনেকে পরিবারের কোন খোঁজ না পেয়ে সড়ক পথেই রওনা দিয়েছেন নেপালে নিজ ঠিকানার গন্তব্যে।

সাভারে এনাম মেডিকলে কলেজের বিভিন্ন ব্যাচে অধ্যায়ন করছেন ১’শ ১৭ জন নেপালী শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্রী। যারা প্রায় সবাই নেপালে ভূমিকম্পে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাতটিও তাদের কেটেছে নির্ঘুম। ফোনে পরিবারের প্রিয়জনের সাথে একবারের জন্যও যোগাযোগ হয়নি তাদের। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাধ্যম বন্ধুদের মাধ্যমে অনেকে খোঁজ খবর নিয়েছেন প্রিয় স্বদেশে থাকা প্রিয়জনের। কেউ বা প্রিয় স্বজনের কোন খোঁজ না পেয়ে মুষড়ে পড়েছেন। কেউ যোগাযোগ স্থাপন করতে পারলেও অনেকে জানেন না তাদের পরিবারের পরিনতি।

এদের একজন নেপালের শেষবর্ষের ছাত্রী আসউইন প্রধান। প্রচণ্ড ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে কাঠমান্ডুর ললিতপুরে তাদের বসতবাড়ি। পরিবারের ভাগ্যে কি ঘটেছে এখনো অজানা তার।

একই ব্যাচের শিক্ষার্থী কাঠমান্ডুর ধারান এলাকার তাবাসসুম শ্রেষ্ঠা জানান, ভূমিকম্পে ধ্বংস স্তুপের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে তার মা।

নেপালের আলাপোট এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী অজিত ফুইরাল জানান, পরিবারের সদস্যরা অক্ষত থাকলেও বাড়িঘরে তান্ডবলীলা চালিয়েছে প্রলয়ংকারী ভূমিকম্প।দীপান্বিতা দেবকোটা নামের আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষার্থীদের অনেকেই সড়কপথে রওনা হয়েছেন নেপালের পথে।

শিক্ষার্থীদের এ পরিস্থিতি বিবেচনায় কেবলমাত্র নেপালী শিক্ষার্থীদের জন্যে সাতদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে এনাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এনাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল মাননান শিকদার জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি গভীর সংবেদনশীল। আমরা বুঝি তাদের মানসিক অবস্থা। তাই আমরা নেপালী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছি। নেপালে যাওয়ার জন্যে যে কোন ধরনের সহায়তা দিতেও প্রস্তত বলে জানান তিনি।