মহিলা পরিষদের দাবি নারীবান্ধব চট্টগ্রাম গড়ার
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে মহিলা পরিষদ জেলা শাখা এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সম্মেলনে নিরাপদ ও নারীবান্ধব চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে ৪৩টি দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি লতিফা কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিন আক্তার হেনা, অর্থ সম্পাদক শুভ্রা দাস, লিগ্যাল সম্পাদক নিলুফার জাহান বেবি, সদস্য গৌরি চক্রবর্তী, নেলী দত্ত, গোপা দত্ত ও মিতা দাস।
মহিলা পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুগতা বড়ুয়া সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের প্রতি ২৪টি, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ১৫টি ও জনগণের প্রতি ৪টি সহ মোট ৪৩টি দাবি তুলে ধরা হয়।
নগরীর বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের বাস। বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে এ বিপুল জনসংখ্যা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে। সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন কাজের কারণে নাগরিকদের নানা দূর্ভোগের সম্মূখীন হতে হচ্ছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং সুপেয় পানি সরবরাহে অপ্রতুলতা, অপিরচ্ছন্ন পরিবেশে খাবারের রেস্তোরার কারণে নাগরিকের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি-মেরামতের কাজ সময়মতো শেষ না করায়, ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকায় দুর্ঘটনার সম্মূখীন হতে হয় পথচারীকে। ট্রাফিক জ্যাম, জলাবদ্ধতা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ প্রভৃতির কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকতে হয় নগরবাসীকে।
চসিক নির্বাচনকে নারী সমাজের দীর্ঘ দিনের দাবি উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্বাচনের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি যাতে সাংবিধানিকভাবে সময়মতো সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য নারী সমাজ সর্বদা সজাগ। আর এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীসমাজ দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রামী ভূমিকা রেখে আসছে। নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ৪৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে।
তাই নারীবান্ধব চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া, মহিলা বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি, গণপরিবহনে মহিলা আসন বৃদ্ধি, কর্মজীবী নারীদের জন্য কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও শিশু রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রত্যেকটি বাজার নারীবান্ধব করাসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়।
নগরীতে নারী জনসংখ্যা ২৫ লক্ষের অধিক উল্লেখ করে এতে বলা হয়, নিরাপদ, সঠিক পরিবেশ না থাকার কারণে সকল বয়সের নারীই প্রায় প্রতিদিন নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। নারীর কর্মস্থলে যথাসময়ে পৌঁছানোর জন্য নেই চাহিদা অনুযায়ী যানবাহন, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা। রাস্তাঘাট, পরিবহন, কাঁচাবাজার কোনটিই নারীবান্ধব নয়।
এছাড়া নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে জনপ্রতিনিধিত্বশীল, জনকল্যাণমুখী সিটি কর্পোরেশনের লক্ষে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ, গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিক বজ্য ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পিত ড্রেনেজ সিস্টেম, ফরমালিন মুক্ত বাজার, যানজটমুক্ত শহর করার লক্ষে পরিকল্পনা প্রণয়নসহ আধুনিক নগরী গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।