কামারুজ্জামানের রায়ে বিশিষ্ট নাগরিকদের সন্তোষ প্রকাশ
জামায়াতে নেতা রাজাকার কামারুজ্জামানকে ফাঁসির রায় (মৃত্যুদণ্ড) ঘোষণায় দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর ব্যারিষ্টার তুরিন আফরোজ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয় হয়েছে। এ রায় মানব সভ্যতার বিজয়। ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এ রায় মাইলফলক হয়ে থাকবে। জাতিকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে পরিত্রাণে এ রায়টি আরো একটি ধাপ হিসেবে ইতিহাসে চিন্থিত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এ আসামির বিরুদ্ধে সকল বিচারিক প্রক্রিয়া আজে শেষ হলো। তবে তিনি প্রাণ ভিক্ষার সুযোগ পাবেন।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এই রায়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের আত্মা শান্তি পাবে এবং দুই লাখ মা বোন যারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের মনোকষ্ট সামান্যতম হলেও প্রশমিত হবে। তিনি বলেন, কামারুজ্জামান আল-বদর বাহিনীর নেতা হিসেবে একাত্তর সালে খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজের মতো অপরাধ করেছিলেন। তাই তার বিরুদ্ধে এই রায় যথার্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সভ্য দেশ। এ ধরনের রায়ের জন্য আমরা অনেক দিন অপেক্ষা করেছি। শেষ পর্যন্ত সেই ন্যায্য রায় ও ন্যায়বিচার পেয়েছি। তিনি বলেন, সত্যের জয় হয়েছে। এই রায় আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নতুনভাবে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ে জাতির আশা পূরণ হযেছে। এ দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছিল, সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে রায়টি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
এখন সরকার এ রায় কার্যকরে উদ্যোগ নিবেন।
কামারুজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে গত বছর ৩ নভেম্বর রায় দেয় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হয়। বেঞ্চের অপর তিনজন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এ রায় রিভিউ আবেদন আজ খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
ট্রাইব্যুনাল তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে হত্যার দায়ে কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছিল। এর মধ্যে তৃতীয় অভিযোগে শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুরে ১২০ জন পুরুষকে ধরে নিয়ে হত্যার দায়ে আপিল বিভাগের চার বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে আসামি কামারুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করে।
আপিলের রায়ে বলা হয়, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।