- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- চুয়াডাঙ্গা-লক্ষ্মীপুর পুলিশ ও গ্রামবাসী সংঘর্ষ, আহত ১১
চুয়াডাঙ্গা-লক্ষ্মীপুর পুলিশ ও গ্রামবাসী সংঘর্ষ, আহত ১১
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের দলকা-লক্ষীপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিলের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১১ জন আহতের ঘটনায় অজ্ঞাত ১৫’শ জনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করছে পুলিশ। অন্যদিকে দলকা-লক্ষীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুবেদার (অস্ত্রধারী এস আই) রবিউলকে রাতেই পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাতে দলকা-লক্ষীপুর গ্রামের লোকজন কর্তৃক পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাতেই অজ্ঞাত এক, দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলা নং-০২। তাং-০৩.০৪.২০১৫ ইং। তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
ওই ঘটনার সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ১৯ রাউন্ড শর্টগানের গুলি বর্ষণ করেছে বলে ওসি স্বীকার করেন।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান জানান, ‘গ্রামবাসী পুলিশ ক্যাম্পে আক্রমণ করলে পুলিশ প্রথমে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষার্থে শর্টগানের গুলি ছোড়ে।’
এলাকাবাসীরা জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় গ্রামের ওয়াজ মাহফিলের জন্য টাকা তুলছিল তারা চাঁদের ছেলে মিজানুর (১৮), শাকের আলীর ছেলে আজাবুল (১৬), জাহাবক্স’র ছেলে রিফাত (১৬), কাতু সরদারের ছেলে সাজিদ (১৫), ও রহিম সরদারের ছেলে হুমায়ূন (১৬)। এ সময় দলকাল ক্ষীপুর পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদেরকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে প্রচণ্ড মারধর করে। এ খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যার পর গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে একযোগে ওই পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ-গ্রামবাসি সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ একাধিক গুলি বর্ষণ করে।
সংঘর্ষ চলাকালে উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। এ সময় গ্রামবাসীর হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে গ্রামের ৭ জন যুবক আহত হয়।
আহতদের মধ্যে ৫ জন মুকুল জোয়ার্দ্দার’র ছেলে সেলিম জোয়ার্দ্দার (১৮), আব্দুর রহিম’র ছেলে স্বাধীন (১৭), জিনাত আলীর ছেলে মিলন (২৫), আব্দুর রহিম’র ছেলে হুমায়ুন (১৭), তারাচাঁদ মিয়ার ছেলে মিজান (১৬) চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এবং সাকের আলীর ছেলে আজাবুল (১৭) ও ক্ষুদে আলীর ছেলে আলীম (২০) নামে ২ যুবক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।
আহত পুলিশ সদস্যদের ৪ জনের মধ্যে ৩ জনের নাম পাওয়া গেছে এরা হলেন, ভগিরথ পুরের ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই ফারুক, লক্ষীপুর ক্যাম্পের পুলিশ কনেসট্যাবল শহিদুল ও জুয়েল। এই ঘটনায় লক্ষীপুর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ সুবেদার (অস্ত্রধারী এসআই) রবিউল ইসলামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। সেখানে ভারপ্রাপ্ত ক্যাম্প ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই মহাব্বত। বর্তমানে গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত আছে।
দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জামিরুল ইসলাম দাবি করেছেন, গুলিবিদ্ধ ৭ জন যুবকই ছাত্রলীগ কর্মী।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেনজির আহাম্মেদ চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনের বিজার্ভ পুলিশ নিয়ে, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানসহ দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে ও আলমডাঙ্গা থানার ওসি মামুনর রশিদ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পরিস্থিতি শান্ত হলে পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান গ্রামবাসীদের সাথে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। বৈঠকে গ্রামবাসীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, জুড়ানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এবং প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেনজির আহাম্মেদ, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান।
বৈঠক থেকে ফিরে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্খিত এট ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে পরবর্তীতে আর কোন অঘটন ঘটবেনা বলে বৈঠকে আলাপ আলোচনায় পুলিশ ও গ্রামবাসী এক মত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় লক্ষীপুর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ সুবেদার (অস্ত্রধারী এসআই) রবিউল ইসলামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। সেখানে ভারপ্রাপ্ত ক্যাম্প ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই মহাব্বত।
তবে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ কয় রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে তা নিশ্চিত করে ওসি কামরুজ্জামান বলতে না পারলেও ধারণা করছেন ১০/১২ রাউন্ড হতে পারে। গুলির হিসেব না করে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবেনা বলে ওসি জানান। বর্তমানে গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত আছে।
sahos24.com | Online newspaper
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।