বিএনপি সেনাবাহিনীর হাত ধরে ক্ষমতায় আসতে চায় : মঞ্জু
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু রাজনীতিতে রাজনীতি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একদিকে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে, অপরদিকে বলা হচ্ছে সেনাবাহিনী না থাকলে এ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আসলে তারা সেনাবাহিনীর হাত ধরে ক্ষমতায় আসতে চান। এ ধরনের বৈপরীত্য রাজনীতিতে কাম্য নয়।
গতকাল জাতীয় যুব সংহতির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু রাজনীতিতেই নয়, অর্থনীতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে পদ-পদবীর জন্য একসময় পরিশ্রম করতে হতো। লড়াই-সংগ্রাম করতে হতো। কিন্তু অনেকে এখন মনে করেন রাজনীতি মানে ওয়ান-টুর খেলা। জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে এটা অনেক রাজনীতিবিদ বা যুব সমাজ চিন্তা করে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, শুধু রাজনীতি নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যকেও অনেকে ওয়ান-টুর খেলা মনে করছেন। অর্থনীতির সব ক্ষেত্র থেকে ফায়দা লুটে অনেকে আক্ষরিক অর্থে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠে। এতে অনেকের মনে এমন ধারণা জন্মায় যে, পরিশ্রম করে ব্যবসা করলে হয়তো অর্থনীতির উচ্ছিষ্ট খাওয়া যেতে পারে, এর বেশি কিছু নয়।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আরো বলেন, এখন নির্বাচনী এলাকায় কর্মী নেই। সবাই সরকারি কাজ চায়। যুব সমাজ এবং ছাত্র সমাজের মধ্যেও এ প্রবণতা এসেছে। এই পরিবেশ রাজনীতির জন্য আদর্শ নয়।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে আমরা ২৩ বছর সংগ্রাম করেছি। কিন্তু এখন দাবি তোলা হয়, সেনাবাহিনী না আসলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এ ধারণা পোষণ করে আমরা বিরাজনীতিকরণের নতুন দৃষ্টিভঙ্গী সৃষ্টি করছি।
জেপি চেয়ারম্যান বলেন, অনেকে পুলিশি নির্যাতনের কথা বলেন। ক্ষমতায় তারাও ছিলেন। তাদের আমলে কত নির্যাতন হয়েছে তা তাদের আত্মশুদ্ধির জন্য হলেও পরিমাপ করা উচিত।
তিনি বলেন, প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতাসীনদের প্রভাব বলয় সৃষ্টি করা নতুন কিছু নয়। তর্কের খাতিরে হয়তো মাত্রার পার্থক্য থাকতে পারে তবে নীতির কোন পার্থক্য নেই।
তিনি বলেন, মূল দল থেকে বের হয়ে জাতীয় পার্টি (জেপি) ১৮ বছর টিকে আছে। কারণ আমরা দলের রাজনীতি করি, ব্যক্তির নয়। জোটবদ্ধ রাজনীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে বলে থাকেন, বাংলাদেশের রাজনীতি দুই জোটভুক্ত। ২০ দল বা ১৪ দল কেন হয়? জোটভুক্ত দলগুলো শক্তিশালী না হলে তাদেরকে জোটে নেওয়া হয় কেন? নিশ্চয়ই দলগুলো শক্তিশালী। যদি বলা হয় যে এই দলগুলোর দরকার নেই, তাহলে দেখা যাবে রাজনীতি কি রূপ পরিগ্রহ করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, সমাজে আজ মূল্যবোধের অবক্ষয় চলছে। সারাদেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যে মানুষের জীবন দুর্বিষহ। এ অবস্থায় যুব সমাজের দায়িত্ব অনেক। সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।
অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী বলেন, জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠার আগেই যুব সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যুব সমাজকে নিয়ে দেশ গড়ার প্রত্যয় থেকেই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। যুব সমাজের নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি এম এ কাইয়ুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য রুহুল আমিন, জেপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন রেনু, যুগ্ম মহাসচিব খলিলুর রহমান খলিল, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জেপির প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম তপন, যুব সংহতির সহ-সভাপতি আলী আবদুল্লাহ টিঙ্কু, মঞ্জুর হাবিব মঞ্জুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ন ম নাজমুল হোসাইন, সাখাওয়াত হোসেন দুলাল, বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক জাকির হোসেন সুলতান, কেন্দ্রীয় সদস্য রমিজুল ইসলাম সোহাগসহ মহানগরীর নেতৃবৃন্দ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।