ঝালকাঠিতে ক্রীড়ামোদীদের উল্লাস
ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল লাল সবুজের বাংলাদেশ। অ্যাডিলেড ওভালে এ ম্যাচে হারের ফলে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিল ইংল্যান্ড। টাইগারদের ২৭৫ রানের জবাব দিতে নেমে ইংলিশরা ৪৮.৩ ওভার খেলে ২৬০ রানে থেমে যায়। ফলে, ১৫ রানের জয় পায় টাইগাররা। এ জয়ে আনন্দ ও উল্লাসে মেতে বিজয় মিছিল বের করে ঝালকাঠির ক্রিড়ামোদিরা।
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৬ টায় স্যাটেলাইট টিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত খেলায় জয় দেখে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে ক্রিড়া প্রেমীরা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সামনে থেকে ক্রীড়া প্রেমীরা বিজয় র্যালি বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রাও করে ক্রিকেট প্রেমীরা।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানাগেছে, বিশ্বমঞ্চের ৩৩তম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করা টাইগাররা ইংলিশদের সামনে ২৭৬ রানের টার্গেট দেয়। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে এ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পান মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। আর তৃতীয় শতকের অপেক্ষায় থেকে মুশফিক ফেরেন ৮৯ রান করে। তবে, দু’জন মিলে ১৪১ রানের বড় জুটি গড়েন। দলীয় ৮ রানের মাথায় দুই ওপেনারকে হারিয়ে সাময়িক বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে, বিপর্যয় কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করে রিয়াদ-সৌম্য জুটি। এ জুটি থেকে তারা আরও ৮৬ রান সংগ্রহ করেন। ২১তম ওভারে জর্ডানের বলে উইকেটের পিছনে জস বাটলারের তালুবন্দি হন সৌম্য সরকার। আউট হওয়ার আগে তিনি ৫২ বলে ৫টি চার আর একটি ছয়ে করেন ৪০ রান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় সাকিব বিদায় নিলে মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। এ দু’জন মিলে গড়েন ১৪১ রানের জুটি। রিয়াদ ১৩৮ বলে ১০৩ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন। এর আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকিয়ে আর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস সর্বোচ্চ রান করেন সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ।
তিনি বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বমঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবেও নাম লেখান। রিয়াদের ইনিংসে ছিল ৭টি চার আর দুটি ছক্কার মার। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে ব্রডের বলে জর্ডানের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে মুশফিক খেলেন ৮৯ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস। তার খেলা ৭৭ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার আর একটি ছক্কা। আর শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে সাব্বির রহমান করেন ১৪ রান। টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ২৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন ইয়ান বেল এবং মঈন আলী। আর বাংলাদেশের দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা বোলিং সূচনার দায়িত্ব নেন। নড়াইল এক্সপ্রেসের করা প্রথম ওভার থেকে ইংলিশ ওপেনাররা নেন তিন রান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রুবেল হোসেন মঈন আলীকে এলবি’র ফাঁদে ফেলেন।
তবে, টাইগারদের প্রথম সাফল্য থেকে নিরাশ হতে হয় আম্পায়ার রিভিউ সিস্টেমের কারণে। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ ওপেনাররা বেশ সহজে মোকাবিলা করে টাইগার বোলারদের। তবে, ইনিংসের অষ্টম ওভারে মাশরাফি আরাফাত সানির হাতে বল তুলে দেন। আর সে ওভারেই দলীয় ৪৩ রানের মাথায় রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন মঈন আলী। আউট হওয়ার আগে ইংলিশ এ ওপেনার করেন ১৯ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের লক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক থেকে ব্যাট চালায় ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। তবে, ইনিংসের ২০তম ওভারে মাশরাফির বলে উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন অ্যালেক্স হেলস।
আউট হওয়ার আগে তিনি ৩৪ বলে ৪টি চারে করেন ২৭ রান। দলীয় ৯৭ রানে ইংল্যান্ড দুই উইকেট হারালেও ওপেনার ইয়ান বেল আর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসা জো রুট দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে, ২৭তম ওভারে রুবেলের বলে উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন ইয়ান বেল। আউট হওয়ার আগে বেল ৬৩ রান করেন। একই ওভারে রুবেল ফেরান ইয়ন মরগানকে।
দলীয় ১২১ রানে রুবেল হোসেনের জোড়া আঘাতে সাজঘরে ফেরেন ইয়ান বেল এবং ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। আর ৩০তম ওভারে তাসকিনের বলে সাজঘরে ফেরেন জেমস টেইলর। এরপর জয়ের লক্ষে বোলিং করতে এসে মাশরাফি ফেরান জো রুটকে। উইকেটের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে টাইগার দলপতি দলকে এনে দেন ষষ্ঠ সাফল্য। উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ার আগে রুট করেন ২৯ রান।
সাহস২৪.কম । অনলাইন সংবাদপত্র
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।