সিলেটে নেটওয়ার্ক করাই ছিল ফারাবীর লক্ষ্য
লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়ার আগে শাফিউর রহমান ফারাবী সিলেটে নিজের নেটওয়ার্ক বিস্তারের চেষ্টা করছিলেন। সে লক্ষ্যে সিলেটে আস্তানা গাড়েন তিনি। তবে বিষয়টি টের পায়নি কাকপক্ষীও। সতর্কতার সঙ্গে তিনি নিজের কার্যক্রম চালিয়েছেন। ফলে তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেননি গোয়েন্দা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সিলেট নগরীর মুন্সিপাড়ায় যে বাসায় ফারাবীর আসা-যাওয়া ছিল, সেই বাসার আশেপাশের কেউ জানত না যে, এই ফারাবীই পুলিশের সন্দেহভাজন অপরাধীর তালিকায় আছে। পুলিশের ধারণা, ফারাবী খুব সতর্কতার সঙ্গে তার নেটওয়ার্ক সিলেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করেছে। এ কারণে ফারাবী অনেক বার সিলেটে আসা-যাওয়া করলেও তা টের পায়নি কেউ। গতকাল রবিবার ফারাবীর সিলেটের বাসায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালানোর পর বিষয়টি প্রকাশ পায়।
মুন্সিপাড়া ঘুরে জানা যায়, শাফিউর রহমান ফারাবী সিলেট নগরীর মুন্সিপাড়ার ডি/১৬ নম্বর বাসায় ২০১৩ সালের শেষদিক থেকে বসবাস করছিলেন। ফারাবীর সৎ বোন অন্তরা সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করে, এ কথা বলে ঠিকাদার মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেওয়া হয়। এরপর থেকে ফারাবী অনেক বার ওই বাসায় যাতায়াত করেন। তবে তার তৎপরতা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন বাসার মালিক মুজিবুর রহমান। ফলে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নীরবেই সিলেটে নিজের জাল বিস্তার করেছেন ফারাবী- এমনটাই ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রবিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানের পর ফারাবীর সিলেট অবস্থান নিয়ে এখানে কর্মরত গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও তোলপাড় শুরু হয়। সিলেট মহানগর পুলিশ বলছে, ঢাকা থেকে নির্দেশনা পেলেই সিলেটে ফারাবীর নেটওয়ার্ক বিস্তারের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
মুন্সিপাড়ায় গিয়ে স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফারাবী অনেক বারই ওই বাসায় এসেছেন এবং বেশ কিছুদিন করে অবস্থান করেছেন। তবে এই ফারাবীই ব্লগার রাজিব কিংবা অভিজিৎ হত্যায় সন্দেহভাজন, সেটা জানা ছিল না কারোই। ফারাবী ওই বাসায় এলে একা একাই থাকতেন, মিশতেন না কারো সঙ্গে।
ফারাবীর বাসার পাশের ডি/১৬ নম্বর বাসার এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ফারাবীর সৎ মা ও বোন প্রায়ই আমাদের বাসায় আসতেন। ফারাবীকে দেখলেও সে সময় তাকে চিনতে পারিনি। সে কারো বাসায়ও যেত না। কারো সঙ্গে তাকে মিশতেও দেখিনি।’
ফারাবীর বাসার মালিক মুজিবুর রহমান জানান, মাঝে মাঝে ফারাবী এখানে এসে থাকতেন। সর্বশেষ কবে ফারাবী সিলেটে এসেছিলেন, তা তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘ফারাবীর সিলেটে আসা-যাওয়া কিংবা অবস্থান করার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানের পর বিষয়টি আমাদের কাছে ধরা পড়ে। তারা চাইলে আমরা ফারাবীর সিলেট নেটওয়ার্কের বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’
sahos24.com | Online newspaper
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।