- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- নাশকতার ১০০ মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে
নাশকতার ১০০ মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় করা প্রায় ১০০ মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নেওয়ার পূর্বানুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ও ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুমোদন দিযেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার সূত্র জানায়, এসব মামলায় আসামি এক হাজারের বেশি। আসামিদের বেশির ভাগই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। এ ছাড়া চলমান সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনার সব মামলাও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিতে অনুমোদন দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ আইনে নাশকতার জন্য অর্থের জোগানদাতাদেরও বিচার করা যাবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া মামলাগুলোর প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতা, অন্যান্য সহিংসতা, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর, জননিরাপত্তা বিঘ্ন করা, বিএনপি ও জামাযাত-সমর্থিত ব্যক্তিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, পেট্রলবোমা তৈরি ইত্যাদি ঘটনায় নোয়াখালী, কুমিল্লা, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁদপুর, নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলায় এসব মামলা হয়েছিল।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতার ঘটনায় করা মামলাগুলো সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিতে অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে এখনো আবেদন পাঠানো হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের কযেকজন কর্মকর্তা বলেন, গত এক বছর পুলিশ এ আইনে মামলা নিতে আগ্রহী ছিল না। তবে চলমান সহিংসতার কারণে বিষযটি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনার পর এ আইনে মামলার অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মতে, সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন, ২০১৩-তে এ আইনে মামলার জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতির বিষয়টি (৪০ ধারা) বাদ দেওয়ায় পুলিশ সহজে এ মামলা করতে পারবে। এর ফলে নিরীহ মানুষও হযরানির শিকার হতে পারেন।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সংজ্ঞা ও শাস্তি সম্পর্কে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি তথ্যবিবরণী দেওয়া হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা জামিন অযোগ্য। এ আইনের মামলার বিচার হবে কম সময়ে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ২০১৩ সালের সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইনের ৪০(১) ধারায় সংশোধনী আনা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, এ আইনের অধীনের অপরাধ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করে মামলা করে তদন্ত শুরু করতে পারবেন।এ আইনের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তি, সত্তা বা সংগঠনের ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেটের যেকোনো মাধ্যমের অপরাধ-সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তা অথবা অপরাধ-সংশ্লিষ্ট স্থির ও ভিডিওচিত্র অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে এবং তা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে। এ আইনের সংজ্ঞায় কোনো ব্যক্তিকে হত্যা, গুরুতর জখম, আটক বা অপহরণের জন্য অপর কোনো ব্যক্তিকে প্ররোচিত করা; ব্যক্তি, সত্তা বা প্রজাতন্ত্রের কোনো সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করা বা করার ষড়যন্ত্র করা; অথবা উদ্দেশ্যসাধনে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ও দাহ্য পদার্থ বহন বা ব্যবহার করলে তা সন্ত্রাসী কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কোনো কাজ করতে প্ররোচিত করা বা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া সন্ত্রাসী কাজ বলে বিবেচিত হবে। যদি কোনো ব্যক্তি বা বিদেশি নাগরিক এ ধারার অধীন কোনো অপরাধ করেন, তবে তিনি সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২০ ধারার সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ১৮ ধারা অনুযায়ী কোনো সংগঠন নিষিদ্ধ হলে সরকার সেই সংগঠনের কার্যালয বন্ধ করতে এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে কোনো ধরনের বিবৃতি, প্রচারণা, প্রকাশনা বা বক্তৃতা দেওয়া যাবে না। ১৮ ধারা অনুযায়ী সরকার যুক্তিসংগত কারণের ভিত্তিতে যেকোনো সংগঠনকে সন্ত্রাসী কাজে জড়িত থাকার দায়ে নিষিদ্ধ করতে পারবে। যেসব মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কয়েকটি উল্লেখ করা হলো: চাঁদপুর: গত বছরের ১৬ মে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিউল আজম বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এই মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছ। পুলিশের অভিযোগ, ফরিদগঞ্জ ইসলামী ট্রাস্ট গঠিত আদর্শ একাডেমির অফিসে এই আসামিরা যুদ্ধাপরাধীদের মামলার রায় ঘোষণার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আসামিদের মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও কযেকজন সদস্য রয়েছেন। চাঁদপুর শহর শাখা জামাযাতের সভাপতি শাহজাহান বলেন, আটক সবাই ছাত্র ও শিবিরের সদস্য। তারা ওই ঘরে কোচিং করছিল। তবে আদর্শ একাডেমি স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, আটক কেউ ওই একাডেমির ছাত্র নয়। তারা ওই কক্ষে শিবিরের বৈঠকে মিলিত হয়।
sahos24.com | Online newspaper
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।