- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- দেশের মাটিতে চাষযোগ্য কয়েকটি বিদেশী ফলের পরিচিতি
দেশের মাটিতে চাষযোগ্য কয়েকটি বিদেশী ফলের পরিচিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
প্রিন্টঅঅ-অ+
১. পীচ
বাংলাদেশের সৈয়দপুর, নীলফামারিতে প্রথম এক নার্সারিতে প্রচুর ফল ধরা পিচ ফলের একটি গাছ দেখে বিশ্বাস হয় যে এ দেশে পিচ ফল হওয়া সম্ভব। স্থানীয় বাসিন্ধারা পীচ ফলের নাম বলেছিল মাজু ফল। এ নামে পিচ ফলের কোন বাংলা বা স্থানীয় নাম আর কোথাও খুজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর ইংরেজী নাম Peach, এ নামটাই এ দেশেও পরিচিত হয়ে উঠেছে। পরে অবশ্য সাভার, গাজীপুর, সৈদয়পুর, নীলফামারী, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম ইত্যাদি এলাকায় ফলধরা বেশ কিছু পীচ ফলের গাছ চোখে পড়েছে। তবে প্রকৃত পক্ষে ফলটি শীতপ্রধান এলাকায় ভালো জন্মে। ভারতের সিমলাতে অনেক পীচ ফলের গাছ আছে। পিচ গাছ মাঝারি আকারের বৃক্ষ, পাতা অনেকটা ডালিম বা শরিফা পাতার মতো দেখতে। পাতার গোড়ায় অনেক ছোট ছোট পাতা থাকে। ফুলের রঙ লাল বা গোলাপি। ফল দেখতে ডিম্বাকার তবে মুখটা আমের মতো বাকানো ও সুচালো। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ পাকলে হালকা হলুদের ওপর লাল আভা সৃষ্টি হয়। কাঁচা ফল শক্ত, খোসা খসখসে। কিন্তু পাকলে নরম হয়ে যায় ও টিপ দিলে সহজে ভেঙে যায়। পাকা ফলের রসালো শাঁস হালকা হলুদ ও ভেতরের দিকে লাল, শাঁসের স্বাদ টক। ফলের মধ্যে খয়েরি রঙের একটা শক্ত বিচি থাকে। পিচ ফল পাকে মে - জুন মাসে। এক কেজি ফল থেকে প্রায় ৪৭০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। চোখ কলম করে পিচ ফলের বংশবৃদ্ধি সম্ভব।
২. অ্যাভোকেডো
অ্যাভোকেডো আসলে আমেরিকার ফল। সে দেশে সুপ্রাচীনকাল থেকে অ্যাভোকেডো চাষ হয়ে আসছে। ও ইনকা সভ্যতার আমলেই অ্যাভোকেডোর পুষ্টি ও খাদ্যমান নির্নিত হয়েছিল। এখন সারা বিশ্বে অ্যাভোকেডো ইংরেজী নামেই পরিচিত। বাংলা কোন নাম নাই। কিন্তু ফলটি যেভাবেই হোক সমতল বাংলার মাটিতেও ফলে। গাজীপুরের কালিয়াকৈর, চাপাইনবাবগঞ্জে কল্যানপুর হর্টিকালচার সেন্টার ও ময়মনসিংহের ভালুকায় লাগানো অ্যাভোকেডো বৃহৎ আকারের গম্বুজ আকৃতির চিরসবুজ গাছ। গাছ ১৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা সরল তবে আকার আকৃতিতে ভিন্নতা দেখা যায়। পাতা ১০-৪০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ছোট ছোট হালকা সবুজ রঙের ফুল ফোটে থোকা ধরে। ছড়ায় ফুল ঝুলতে থাকে। ডালের আগায় সাধারনত ফুল ফোটে। অ্যাভোকেডোর লাখ লাখ ফুল ফোটে, কিন্তু আমের মতোই ফল হয় খুব কম ফুল থেকেই। ফোটা ফুলের মাত্র ০.১ শতাংশ ফুল থেকে ফল হয়। কারণ দিনের এক সময় ফোটে পুরুষ ফুল, অন্য সময় ফোটে স্ত্রী ফুল। ফুল ফোটে শরতের শেষে এবং ফল পরিণত হতে ৬-১২ মাস লেগে যায। অ্যাভোকেডো ফল বেশ বড়, প্রতিটি ফলের ওজন ১-৩ কেজি পর্যন্ত হয়। ফলের ভেতরে একটা বড় শক্ত বীজ থাকে বীজের চারদিকে থাকে শাঁস। শাঁসের ওপরে থাকে চামড়ার মতো খোসা। দেখতে অনেকটা নাশপাতির মতো আকার তবে গোলাকার জাতেরও আছে। ফলের রঙ সবুজ বা হলদে সবুজ থেকে হলুদ।
আজকাল প্রায়শই কিছু নার্সারির লোকেরা একটি গাছকে আপেল গাছ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যে গাছটিকে আপেল গাছ বলা হচ্ছে, সেটি আপেল নয়, তারকা ফলের গাছ। এ দেশে আপেল হবে না। কারন আপেল জন্মাতে বছরের একটা নিদিষ্ট সময় বরফ পড়তে হয়। তারকা ফলের নামের সাথে যে আপেল শব্দটা রয়েছে ’ মুখে মুখে রটতে রটতে স্টার গিয়ে বসেছে আকাশের তারা হয়ে, রয়ে গেছে আপেল। তা ছাড়া তারকা ফল দেখতেও অনেকটা সবুজ আপেলের মতো। তাই ওকে আপেলের ভাই বলে। এ দেশে আপেল হয় না সত্য তবে স্টার আপেল হয়। গাজীপুরে বিএআরআইয়ের উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে স্টার আপেলের বয়সী গাছটাতে যেভাবে ডাল ভেঙে ফল ধরেছে, তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। তা থেকে আশা করা যায় এ দেশে ও ভালো ফল ফলতে পারে। তারকা ফলের গাছ বৃহৎ আকারের শোভাময়ী বৃক্ষ। গাছ ১০ মিটার পর্যন্ত উচু হয়। পাতা দোরঙা। অর্থাৎ ওপরের পিঠ গাড় সবুজ ও নিচের পিঠ মেরুন বাদামি। পাতা কিছুটা ডিম্বাকার, বর্শার ফলার মতো।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।