‘সোয়াইন ফ্ল’ ঝুঁকিতে দর্শনা রেলওয়ে চেকপোস্ট
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ‘সোয়াইন ফ্লু’ প্রতিরোধ বিষয়ক নির্দেশনা উপেক্ষা করা হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। ফলে ‘সোয়াইন ফ্লু’ ঝুঁকিতে রয়েছে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার এ দুই চেকপোস্টে ভারত থেকে দেশের অভ্যন্তরে আসা যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দায়িত্বশীল কোনো চিকিৎসককে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘সোয়াইন ফ্লু’প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মন্ত্রী বলেন,‘সোয়াইন ফ্লু’র বিস্তার রোধে জেলা পর্যায়ে মেডিকেল সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। ভারত সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোতে এ দলগুলোকে সার্বক্ষণিক সতর্ক রাখা হয়েছে। বক্ষ ব্যাধি, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালসহ দেশের ৬৪টি জেলা হাসপাতালে এ জন্য পৃথক বিশেষ ইউনিট খোলা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীর এ নির্দেশনা এখনও কার্যকর করেনি চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার আন্তর্জাতিক রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সরেজমিনে শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ‘ইবোলা ভাইরাস’ প্রতিরোধ বিষয়ক ব্যানার টানিয়ে রেখেছে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী।‘সোয়াইন ফ্লু’প্রতিরোধ বিষয়ক কোনো চিহ্ন সেখানে পাওয়া যায়নি।
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে নিয়োজিত দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহজামাল ও ভেকসিনেটর শহিদুল ইসলাম যাত্রীদের অবতরণ কার্ড পূরণ কাজে ব্যস্ত ছিলেন। দায়িত্বশীল চিকিৎসকের খোঁজ করলে তারা জানান, এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা এখনও তাদের কাছে আসেনি।
তাৎক্ষণিক চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ইবোলা ভাইরাস’প্রতিরোধে যে স্বাস্থ্য পরীক্ষক টিমটি ছিল তারাই কাজ করছে। দর্শনার আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে গিয়ে‘সোয়াইন ফ্লু’বিষয়ক কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষক টিম পাওয়া যায়নি-এ প্রসঙ্গে জানতে তিনি দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসানুজ্জামান নূপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
মোবাইল ফোনে ডা. হাসানুজ্জামান নূপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জোর দাবি করেন যে, দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দুটোতেই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষক টিম আছে এবং তারা সেখানে কাজ করছে। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কেউ নেই শুনে তিনি দ্রুত সেখানে মোটরসাইকেলযোগে হাজির হয়ে দেখেন কোনো দায়িত্বশীল চিকিৎসকই সেখানে নেই। এ সময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে শনিবার থেকে দুটি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ‘সোয়াইন ফ্লু’ প্রতিরোধ বিষয়ক স্বাস্থ্য পরীক্ষক টিম রাখার নিশ্চয়তা দেন।
তিনি বলেন, পালাক্রমে ডা. নাজমুল আরেফিন, ডা. রাকিবুল হাসান, ডা. আফজালুর রশিদ ও ডা. শাকিলা নাজনিন রিংকু সোয়াইন ফ্লু বিস্তার রোধে স্বাস্থ্য পরীক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মীর লিয়াকত আলী জানান, সপ্তাহের প্রতি শুক্র, সোম ও বুধবার বাংলাদেশ থেকে মৈত্রী ট্রেন দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে যাত্রী নিয়ে ভারতে যায়। আর ভারত থেকে সপ্তাহের শনি, রবি ও মঙ্গলবার মৈত্রী ট্রেন দর্শনা রেলওয়ে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে ঢাকায় যায়।
তিনি জানান, ‘সোয়াইন ফ্লু’বিস্তার রোধে এখানে কাউকে কাজ করতে দেখা যায় না। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দু’একজনকে ‘ইবোলা ভাইরাস’ সংক্রান্ত একটি ব্যানার টানিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। এর বেশি তিনি কিছু বলতে পারেননি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।