দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় ভুগর্ভস্থ নূরি পাথরে জন্য খ্যাত। জেলার জনগোষ্ঠির বিরাট অংশ এই পাথর শিল্পের উপর নির্ভরশীল। আর এই পাথর শিল্পকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে জেলার লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থা। বিএনপির নেতৃত্বাধিক ২০ দলের ডাকে চলমান টানা অবরোধ আর হরতালে মহাবিপাকে পড়েছে জেলার অন্যতম অর্থনিতির মাধ্যম পথর শিল্প। ব্যবসায়ীরা গুণছে লোকশান আর অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে শ্রমিকেরা। 

পঞ্চগড় জেলার মানুষের অন্যতম অর্থনৈতিক মাধ্যম খনিজ সম্পদ পাথর। এ জেলার ভূগর্ভস্থ নুড়িপাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নির্মাণ কাজে ব্যাপক চাহিদা। বর্তমানে জেলার তেতুলিয়া, আটোয়ারী ও  সদর উপজেলার সমতল ভূমি ও নদী থেকে পাথর উত্তোলন করা হয়ে থাকে। জীবিকার তাগিদে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পাথর শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছে। 

বিকল্প জীবিকা না থাকায় পুরুষের পাশাপাশি হাজার হাজার দরিদ্র নারী শ্রমিক পাথর প্রক্রিয়াকরণ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। চলমান সময়ে মাটি খনন করে পাথর উত্তোলন, পাথর প্রকৃয়াকরণ ও বিক্রি সহ নানা কাজে মহাব্যস্ত থাকবার কথা ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের। কিন্তু ২০ দলের টানা অবরোধ আর হরতালে মাহা বিপাকে পড়েছে ব্যাবসায়ী ও শ্রমিকেরা। পরিবহন না চলায় জেলার পাথর, অন্য জেলায় যেতে পারছেনা। ফলে ব্যাবসা প্রায় বন্ধ হওয়ায় লোকসান গুনছে পথর ব্যাবসায়ীরা। অন্যদিকে কাজ না থাকায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন পাড় করছেন শ্রমিকরা। প্রতিদিন কাজের সন্ধানে ঘুরে ঘুরেও কাজ না মেলায় চরম দূর্ভোগে কাটছে পাথর শ্রমিকদের দিন রাত্রী। 

এক পাথর ব্যবসায়ী জানান, টানা অবরোধের কারনে অন্য জেলা থেকে পাথর ব্যবসায়ীরা না আসার কারণে পাথর বিক্রি হচ্ছেনা। ফলে পাথরের খননসহ প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

কয়েকজন পাথর শ্রমিক জানান, অবরোধের কারণে পাথর মালিকরা কাজ  বন্ধ রাখায়  আমরা কাজ না পেয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে  অনেক কষ্টে দিন পাড় করছি। 

পঞ্চগড় সভাপতি পাথর বালি ব্যবসায়ী সমিতি মো: আমানুল্লাহ বাচ্চু জানান, বর্তমানে পঞ্চগড়ে পাথর শিল্পের সাথে জড়িয়ে আছে ৬ হাজার ব্যবসায়ী ও ৪০ হাজার শ্রমিক। টানা অবরোধ ও হরতালের কারনে স্থবির হয়ে পড়েছে পঞ্চগড়ের পাথর শিল্প। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা।

সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে জেলার অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম এই পাথর শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।