১'শ টাকার দাবিতে সংখ্যালঘুকে মারধর
ঝালকাঠির বাউকাঠি ও পাঁজিপুথিপাড়া এলাকায় একটি সুদ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে জিম্মি অসহায় সাধারণ দরিদ্র মানুষ। সুদের টাকা দিতে দেরী হলে মারধর ও নির্যাতন করার ফলে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় অর্ধশত পরিবার।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, সুদ ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন ওরফে বেলা, ডব্লিউ তালুকদার, সাজেদ মল্লিক, লিটন তালুকদার, দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলু জোমাদ্দার ও তার পুত্র রাসেল জোমাদ্দার মিলে একটি গ্রুপ রয়েছে। তারা সুদ হিসেবে ১ হাজার টাকায় প্রতি হাটে ১শ টাকা নেয়। প্রতি সপ্তাহে দুটি করে হাট বসায় মাসে ৮ হাটে প্রতি হাজারে ৮ শ করে টাকা নেয়। এ ধরণের গলাকাটা সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে স্থানীয় দরিদ্র জনসাধারণ অতি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়ছে। একবার যদি কেউ এ ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাকে আর বের হবার সুযোগ নেই।
সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সর্বস্ব শেষ করে দেশে ছেড়েছেন একই এলাকার সন্তোষ মিস্ত্রি (৭০), সোহাগ (২৫), বাদল (২৫), বিপ্লব (৩০) তরু (৪০), রুবেল গাঙ্গুলী (৩০), হরে কৃষ্ণদাস (২৫)। সুদ ব্যবসায়ীদের নির্যাতনের ভয়ে বাজারে বের হতে পারছে না পলাশ হালদার, নান্নু তালুকদারসহ প্রায় ৩০ জন।
ভুক্তভোগী নিতাই গাঙ্গুলী বলেন, সাংসারিক অতিপ্রয়োজনে ১৩ ডিসেম্বর বেলায়েত হোসেন ওরফে বেলা ভাইয়ের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ঋণ নেই। কয়েক দিনের মধ্যে সুদাসল মিলে ২ হাজার ৩শ টাকা হওয়ায় আমি তাকে ২হাজার ২শ টাকা দিয়ে ১শ টাকা মাফ করে দিতে বলি। রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় পাঁজিপুথিপাড়া হাটে গেলে বেলা ভাই আমার কাছে পুনরায় সমুদয় টাকা দাবি করে। আমি তাকে টাকা দিয়েছি বললে তিনি আমাকে মারধর করেন। সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাকে মারতে সাহস পেয়েছে, আমি এর বিচার চাই।
স্থানীয়রা জানায়, বেলায়েত ওরফে বেলা বিগত কয়েকদিনে সুদের টাকা আদায়ের জন্য বাবু, রমেন, বিপুল, বাবুলসহ কয়েকজনকে মারধর করেছে।
এব্যাপারে বেলায়েত হোসেন ওরফে বেলার কাছে সাক্ষাতে জানতে চাইলে তিনি এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলবেন বলে কেটে পড়েন।
মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক অমরেশ রায় চৌধুরী বলেন, এখানে প্রয়োজনের তাগিদে ঋণ নেওয়া দরিদ্রদের কাছ থেকে গলাকাটা সুদ আদায় করা হচ্ছে। তারপরেও টাকা পেলে টাকা নিবে, কিন্তু আইন হাতে তুলে মারধর করে টাকা নেওয়াটা চরম অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।