খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় তামাকের বিকল্প হিসেবে চাষ হচ্ছে আঁশতুলা। এই তুলা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। পরিবেশ এবং আবাদি জমি উভয়ের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষ থেকে কৃষকদের বিরত রাখতে এই উদ্যোগ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের।
এ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বমোট ১১ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে তুলা। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি তাই তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে প্রান্তিক কৃষকদের। এমনটাই জানা গেছে তুলা চাষি এবং তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার সাথে কথা বলে।
উপজেলার তুলা উন্নয়ন বোর্ড ২০১১ সালে ১১ জন চাষিকে নিবিড় তুলা চাষ কর্মসূচির আওতায় আনে। তুলা চাষ হয় মোট ১১ বিঘা জমিতে। বিভিন্ন এলাকার তুলা প্রদর্শনী প্লটে রুপালী-১, সিবি-১২, সিবি-১৩ ও সিবি-১৪ জাতের তুলা চাষ হয়। তুলা চাষিদের বিনামূল্যে সার, কীটনাশক ও বীজ সরবরাহ করা হয়। তুলা উন্নয়ন বোর্ড চাষিদের বাজারজাত করারও নিশ্চয়তা দেয়।
প্রতি বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে খরচ হয় ৮ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তুলা উৎপাদন হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি। বিঘা প্রতি যার বাজার মূল্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের ৩৬৩টি সুতাকলে প্রায় ৪০ লাখ বেল আঁশ তুলার চাহিদা রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী তুলা উৎপাদন না হওয়ায় প্রতিবছর প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। সেজন্যই তুলার উৎপাদন বাড়াতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে কৃষকদের।
দীঘিনালার মাইনি ব্রিজ সংলগ্ন বাবুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মাইনি নদীর দু’কূল ভরে আছে তামাক চাষে। এর মধ্যেই তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় আঁশতুলা চাষ করেছে শান্তি দেবী চাকমা।
তিনি জানালেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশেই তামাক চাষ করেছে অনেকে। তামাক খেতে যখন কীটনাশক দেওয়া হয় তখন গন্ধে বাড়িতেও থাকা যায় না। তুলা উন্নয়ন বোর্ড থেকে তুলা চাষের প্রস্তাব দিলে রাজি হই। তুলা চাষে স্বল্প খরচে কম পরিশ্রম; লাভও বেশি’।
উপজেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর উল্লাহ জানান, ‘ক্ষতিকর তামাক চাষের বিকল্প কিছু করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। এবার ১১ বিঘা জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। এর ফলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি এখানকার সমতল জমিতে তুলা চাষ করলে কৃষকরা লাভবান হবে’।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।