গাইবান্ধায় ৫০টি গ্রামে গড়ে উঠেছে কুঠির শিল্প
পিয়ারুল ইসলাম, গাইবান্ধা
প্রিন্টঅঅ-অ+
গাইবান্ধায় অর্ধশতাধিক গ্রামে গড়ে উঠেছে কুঠির শিল্প হোসিয়ারি কারখানা। এসব কারখানায় স্থানীয় দক্ষ এবং অদক্ষ প্রায় ৫ হাজার কারিগর কাজ করছেন। তাদের উৎপাদিত শীতবস্ত্র শুধু এ অঞ্চলের চাহিদাই পূরণ করছে না বরং দেশের বিভিন্ন এলাকাসহ বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের বনগ্রাম পেপুলিয়া, মুকুদপুর, ধারাইকান্দি, রতনপুর, ছয়ঘড়িয়া, জগদীশপুর, শক্তিপুর, কোচাশহর ও নয়ারহাটসহ ৫০টি গ্রামে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের হোসিয়ারি কারখানা। এসব কারখানায় এ অঞ্চলের মানুষের বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে।
হোসিয়ারি শিল্প কারখানাভিত্তিক সংগঠন উপজেলার নয়াবন্দর কুটির শিল্প এসোসিয়েশনের সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, নয়ারহাট হচ্ছে এসব হোসিয়ারি শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের বেচাকেনার সবচেয়ে বড় ব্যবসা কেন্দ্র। এখানে প্রায় আড়াইশ শীতবস্ত্রের দোকান রয়েছে। প্রত্যেক দোকান মালিকের রয়েছে নিজস্ব কারখানা। যেখানে প্রতিদিন চলে খুচরা এবং পাইকারী বিক্রয়।
নয়াবন্দর কুটির শিল্প এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জানান, এসব কারখানায় তৈরী হয় সোয়েটার, কার্ডিগান, মাফলার, মোজা, ছোটদের পোশাকসহ বিভিন্ন ধরণের শীতবস্ত্র।
পশমি সুতায় তৈরি এসব শীতবস্ত্র ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের সর্বত্র সরবরাহ করা হয়। এখানে একটি মোজা তৈরির মেশিন নিয়েই যেমন একজন তার কারখানা শুরু করেছে, তেমনি আবার কেউ শতাধিক সোয়েটার তৈরির মেশিনসহ তার কারখানা চালু করেছে।
তিনি আরও জনানন, কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে এমন কারখানা মালিকের সংখ্যাও কম নয়। এখানকার উৎপাদিত শীতবস্ত্র দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চাহিদার একটি বড় অংশই পূরণ করে থাকে।
ঢাকার সিনহা গ্রুপের কারখানায় রফতানি মুখী শীতবস্ত্র উৎপাদিত হয়ে থাকে কাচা শহর বাজারে। ওই কারখানায় উৎপাদিত সোয়েটারসহ অন্যান্য শীতবস্ত্র তৈরি করার পর তা ঢাকায় ফিনিশিং দিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়। ওই কারখানায় প্রায় ৬’শ সোয়েটার তৈরির আধুনিক মেশিন রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তবে, টানা অবরোধ-হরতালের কারণে এখানকার ব্যবসায়ীরা সংকটের মুখে পড়েছেন। ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা না হওয়ায় পুঁজি সংকটে পড়েছে কারখানা মালিকরা। বিপুল পরিমাণ উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় সেগুলো কারখানায় পড়ে আছে। সে কারণে এ মৌসুমে এখানকার ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।
নয়ারহাটের কারখানা মালিক শাহাদুল ইসলাম জানান, এ সমস্ত বিকাশমান ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে স্থানীয় ব্যাংকগুলো বর্তমান কোন ঋণ প্রদান করছেন না। ফলে কারখানা চালাতে তাদের উচ্চ সুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণ নিতে হচ্ছে। ব্যবসা ভাল না হলে ঋণগ্রস্ত হয়ে তাদের বিপাকে পড়তে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।