প্রতিবাদ সত্ত্বেও চলছে নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ
আফ্রিকার দেশগুলোতে এখনো চলছে নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ৷ যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তা নিষিদ্ধ৷ ঐতিহ্য রক্ষার নামে নারীর উপর বর্বর নির্যাতনের কিছু ছবি পাবেন এই ছবিঘরে৷
কেনিয়ার রিফ্ট গ্রামের এই নারী হাতে থাকা ব্লেডটি দিয়ে ইতোমধ্যে চারজনের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করেছেন৷ পোকোট জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য অনুযায়ী, ব্লেড দিয়ে মেয়েদের যৌনাঙ্গের বাইরের অংশ কেটে বা যৌনাঙ্গচ্ছেদের মাধ্যমে তাঁদের মেয়ে থেকে নারীতে পরিণত করা হয়৷ যদিও বিশ্বের অনেক দেশে এটা নিষিদ্ধ, তাসত্ত্বেও অনেক নারী এখনো এই বর্বরতার শিকার হণ৷
এই কিশোরী কোনোদিন যৌনাঙ্গচ্ছেদের যন্ত্রণার কথা ভুলবে না৷ কিন্তু ভবিষ্যতে সে কি এই ব্যথা থেকে তার মেয়েকে রক্ষা করতে পারবে? কিছু দেশে এখন শিশুদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা হয়৷ কেননা বাচ্চাদের করা হলে সেটা আলাদাভাবে মানুষের নজর কাড়ে না!
ব্যথা সহ্য করে থাকতে হবে
একজন খৎনাকারী একটি মেয়ের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করছেন৷ স্থানীয়রা আশা করেন যে, মেয়েরা এ সময় মুখ বুজে ব্যথা সহ্য করে যাবে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, দশ শতাংশ মেয়ে যৌনাঙ্গচ্ছেদের সময় মারা যায়৷ আরো ২৫ শতাংশ মারা যায় যৌনাঙ্গচ্ছেদের কারণে সৃষ্ট শারীরিক জটিলতার কারণে৷ সোমালিয়ার ৯৮ শতাংশ মেয়ে যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার৷
যৌনাঙ্গচ্ছেদের অনুষ্ঠান বা আচার শুরুর আগের প্রস্তুতির ছবি এটি৷ পোকোট জনগোষ্ঠীর নারী এবং শিশুরা আগুনের পাশে বসেছেন শীত থেকে বাঁচতে৷ এখানকার নারীদের মধ্যে যাঁরা যৌনাঙ্গচ্ছেদ বা ‘ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন’ (এফজিএম) করতে চান না, তাঁদের সহজে বিয়ে হয় না৷ আর প্রত্যন্ত এই এলাকায় বিয়ে ছাড়া মেয়েদের পক্ষে চলা কার্যত অসম্ভব৷
রিফট উপত্যকার একটি কুঁড়েঘরে যৌনাঙ্গচ্ছেদের জন্য অপেক্ষা করছেন কয়েকজন পোকোট মেয়ে৷ ২০১১ সালে কেনিয়া সরকার এই চর্চা নিষিদ্ধ করেছে৷ তবে ইউনিসেফ-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি অন্তত ২৭ শতাংশ মেয়ের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে৷
পাথরের উপর রক্ত
একেক গোষ্ঠী একেকভাবে যৌনাঙ্গচ্ছেদ করে থাকে৷ পোকোট সম্প্রদায় যোনিদ্বার কেটে ফেলে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মূলত তিনভাবে যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা হয়৷ প্রথম পদ্ধতি হচ্ছে, ক্লিটোরিয়াস বা ভঙ্গাকুর কেটে ফেলা৷ দ্বিতীয় পদ্ধতিতে, যোনিদ্বারের বাইরের এবং ভেতরের কিছু অংশ কেঁটে ফেলা হয়৷ আর তৃতীয় পদ্ধতিতে কার্যত যোনিদ্বার পুরোটা কেটে সমান করে ফেলা হয়৷
পোকোটদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মেয়েদের দেহে সাদা রং করা হয়৷ তারা আগে থেকেই ধরে নেয় যে, এতে করে সংক্রমণে বা মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে মেয়েটি মারা যেতে পারে৷ এমন বর্বরতা থেকে মেয়েদের বাঁচাতে ২০১৪ সালে বিশেষ পুলিশ বাহিনী তৈরি করেছে কেনিয়া৷
যৌনাঙ্গচ্ছেদের পর একটি মেয়েকে পশুর চামড়া জড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ পোকোট জনগোষ্ঠীর ধারা অনুযায়ী, মেয়েটি এখন বিয়ের উপযোগী হয়েছে৷ অনেক উপজাতী গোষ্ঠী মনে করে, এফজিএম হচ্ছে স্বাস্থ্যকর ব্যাপার৷ এরফলে মেয়েরা আরো বেশি গর্ভধারণের উপযোগী হয় এবং স্বামীর প্রতি অনুগত থাকে৷
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।