‘দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ’
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
প্রিন্টঅঅ-অ+
বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর পরদিন গতকাল শনিবার এক গোলটেবিল আলোচনায় এ উদ্যোগের কথা জানানো হয়। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে ‘জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। গোলটেবিল আলোচনার প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান ও দ্বিতীয় অধিবেশনে এ টি এম শামসুল হুদা ।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়েও এখন দুশ্চিন্তার কারণ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির নিরসন নয়, ভবিষ্যতের জন্য স্থিতিশীল রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের জন্য একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা দরকার। হাফিজউদ্দিন খান বলেন, একটি ঘোষণা দিয়ে বসে থাকলে হবে না। সংকট নিরসনে দেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
আলোচনায় বলা হয়, চলমান সংকট নিরসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি সময় নির্ধারণের জন্য এবং হরতাল-অবরোধ ও পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা বন্ধ করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান থাকতে পারে। এর পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধী ছাড়া সব রাজবন্দীর মুক্তি ও ছয় মাস রাজপথে কোনো কর্মসূচি না দেওয়া এবং এই সময়ের মধ্যে সংকট নিরসনের পন্থা উদ্ভাবনের চেষ্টা অব্যাহত রাখার বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
অবশ্য এর আগে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে আহ্বান জানালেও তাতে কোনো সাড়া পায়নি কেও।
আলোচনার প্রধান উদ্যোক্তা বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন সূচনা বক্তব্যে বলেন, দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। অথচ রাজনীতির আগুনে তাদেরই জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এই অবস্থা নিরসনে দেশের নাগরিকদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।
ডক্টর আকবর আলি খান বলেন, দুই জোটের জনসমর্থন প্রায় সমান হলেও একে অপরকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এর সমাধান এত দ্রুত সম্ভব নয়। এই অবস্থায় সংলাপও সম্ভব নয়। তবে ঐক্যবদ্ধ হলে সুশীল সমাজের পক্ষে এই সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হতে পারে। তিনি আরও বলেন, সংকট নিরসনে ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। প্রথমে দুই জোট পরস্পরকে গালিগালাজ, পেট্রলবোমা মারা বন্ধ রাখুক। তারপর কী নিয়ে আলোচনা করা যায়, সেই কথাবার্তা শুরু করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভক্তির কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সমাধানই সফল হতে পারে। কাউকে নিঃশেষ করে দেওয়ার নীতি দুই দলের কারও ক্ষেত্রেই সফল হবে না।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নাগরিকদের পক্ষ থেকে সংকট নিরসনের লক্ষ্যে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা যেতে পারে। তাতে নির্বাচনকালীন সরকারপদ্ধতি, নির্বাচনী আইনকানুন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং আরও কতিপয় সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয় থাকতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেজা কিবরিয়া বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারেরই দায়িত্ব বেশি। শুধু দমন করার ক্ষেত্রে নয়, সমাধানের ক্ষেত্রেও।
আলোচনায় এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান,গণফোরামের মোস্তফা মহসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি সুলতান মো. মনসুর আহমেদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, এম কে রহমান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।