গাইবান্ধায় পুলিশ-বিজিবির সামনেই বাসে আগুন: শিশুসহ নিহত ৬
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রিন্টঅঅ-অ+
গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের তুলসীঘাট এলাকায় বুড়িরঘর নামক স্থানে নাপু এন্টারপ্রাইজের (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৪৮১৩) যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় ২শিশু সহ ৬জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছে ৪৬ জন। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে এক শিশুর পরিচয় জানা গেছে। তার নাম সুজন (১০)। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের তারা মিয়া ও সোনা বানুর ছেলে। এ ঘটনায় শিশুটির মা সোনা বানুকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) বার্ন ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম।
পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে এবং গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় শিশুসহ চারজন। দগ্ধ ১৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে মারা যায় দুজন। এদের মধ্যে একজন শিশু এবং ঘটনাস্থলে নিহত হওয়া এক শিশুর মা।
জানাগেছে, পুলিশ-বিজিবি পাহারায় জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর থেকে নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি বাস প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথে তুলসীঘাট এলাকার বুড়িরঘর নামক স্থানে ওই বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। হতাহত হওয়া সবাই ওই বাসের যাত্রী। তাদের মধ্যে কেউ গার্মেন্ট শ্রমিক, কেউ রিকশাওয়ালা এবং অধিকাংশই ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। কারো কারো সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও ঢাকায় যাচ্ছিল।
গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) আবু হানিফ জানিয়েছেন, চারজনের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রংপুরে পাঠানোর পর এক শিশু মারা গেছে। পরে সেখানে অগ্নিদগ্ধ আরো এক নারী মারা যান।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছয়জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যারা এখন গাইবান্ধায় চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদের কারো ২০ শতাংশ, কারো ৩০ শতাংশ, কারো ৫০ শতাংশ এমনকি কয়েকজনের ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
অপরদিকে রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেসব অগ্নিদগ্ধকে আনা হয়েছে, তাদের শরীরের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) বার্ন ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত গাইবান্ধায় বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় দগ্ধ ২০ রোগী রমেকে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে শনিবার সকালে সুজন নামে এক শিশু মারা গেছে।
এছাড়া ছয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের সবার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। আহতদের মধ্যে সাত জনকে বার্ন ইউনিটে, অবজারবেশনে নয় জন, অর্থপেডিকে এক জন, সার্জারিতে তিনজন ভর্তি করা হয়।
গাইবান্ধা পৌর প্যানেল মেয়র মোস্তাক আহমেদ রনজু দাবি করেন, জামায়াত-শিবির কর্মীরাই এই সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক এহছানে এলাহী বলেন, হামলাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।