রামগঞ্জর ডাক্তাররা প্রাইভেট ক্লিনিক নিয়ে ব্যস্ত!
৫০ শয্যা বিশিষ্ট রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার আর বহিরাগত দালাল চক্রের কার্যকলাপে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি চরমে। ডাক্তার মো. নাজমুল হকসহ কতিপয় কয়েকজন ডাক্তার প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
উপজেলার দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা রোগী ও অভিভাবক প্রতিনিয়ত অসাধু ডাক্তার আর দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ থেকে শুরু করে ডাক্তারদের চেম্বারে প্রতি মুহূর্তে দেখা যায় দালালদের আনাগোনা।
ডাক্তারদের চেম্বার থেকে রোগীরা বের হতে না হতে এক শ্রেণির দালাল চক্র ডাক্তারদের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্য তাদেরকে সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও তার আশেপাশের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। এ ছাড়া ডাক্তারের অনুপস্থিতসহ নানা কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। বেশীর ভাগ সময়ে হাসপাতালে নতুন কয়েকজন ডাক্তার ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায় না।
জানা গেছে, রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডাক্তার মুজাম্মেল হকের অদক্ষতার কারণে ডাক্তার মো. নাজমুল হকসহ কয়েকজন ডাক্তার হাজিরা খাতায় নাম সই করেই প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করতে থাকেন কখন বাহির থেকে ফোন আসবে। প্রাইভেট ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোন আসা মাত্রই সেখানে ছুটে যান তারা।
এ ছাড়াও ডাক্তারগণ হাসপাতালে রোগী দেখার পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে নিজ নিজ পছন্দনীয় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দেন। এতে গরিব ও নিরীহ রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে হাসপাতালের পিয়ন থেকে শুরু করে নার্স এবং কেরানি পর্যন্ত কমিশন বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণাটি রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনোভাবেই কার্যকর নেই।
সরেজমিনে সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার মো. নাজমুল হকের চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন রোগী ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে আছেন। ডাক্তার চেম্বারে না থাকার কারণ জানতে চাইলে রোগীরা বলেন, স্যারের মোবাইলে ফোন আসলে প্রায় এক ঘন্টা আগে তিনি আমাদের বসিয়ে রেখে হাসপাতালের বাহিরে চলে যান।
পরে সূত্রে জানা যায়, ডাক্তার মো. নাজমুল হক ওই সময়ে হাসপাতাল সংলগ্ন মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাইভেট রোগী দেখছেন। সত্যতা যাচাই করতে স্থানীয় সাংবাদিকরা মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর তিনি ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের হওয়ার সময় তার ছবি তুলতে গেলে তিনি মুখ ডেকে হাসপাতালের দিকে দ্রুত চলে যান।
এ সময় তিনি দম্ভ করে সাংবাদিকদের বলেন, পত্রিকায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অনেক সংবাদ প্রকাশ করেছেন, কই আমাদের তো কিছুই হয়নি। এখনো লিখলে কিছুই হবে না।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুল আলম ও লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জেন্ট ডা. এমজি ফারুক ভূঁইয়াকে জানানো হলে তাঁরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।