ব্লাসফেমিতে বিপর্যস্ত আসিয়া বিবির পরিবার
পাঁচ বছর ধরে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে রয়েছেন পাকিস্তানের পাঞ্জাবের দরিদ্র নিরক্ষর নারী আসিয়া বিবি।
তার বিরুদ্ধে ইসলামের নবী মোহাম্মদকে ব্যঙ্গ করার অভিযোগে ব্লাসফেমি আইনে অভিযোগ আনলেও তিনি তা শক্তভাবেই অস্বীকার করেছেন।
ওই নারীর স্বামী এক সাক্ষাতকারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছেন।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমির সাধারণ অভিযোগেও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এমনকি এটি পুরো একটি পরিবারকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য যথেষ্ট।
আর এ কারণেই আসিয়া বিবির পরিবারের সদস্যরা প্রায় পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তার সাজা ঘোষণার পর রাস্তায় মিছিল হয়েছে তার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে এমনকি কেউ কেউ এমন হুমকিও দিয়েছে যে সে কখনো বের হলে তাকে হত্যা করা হবে।
আসিয়ার গ্রেপ্তারের পর থেকেই তা স্বামী আশিক মাসিহ ও তাদের পাঁচ সন্তান পলাতক রয়েছেন।
তার স্বামী বলেন, “আমাদের মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছে। এক স্থানে বেশিদিন থাকতে পারিনা আমরা। এভাবে পালিয়ে থাকা বাচ্চাদের জন্য কঠিন”।
তিনি বলেন ,“ব্লাসফেমি আইন আমাদের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে”।
আসিয়ার দুর্ভোগের শুরু হয় যখন পাঞ্জাবে তার গ্রামে স্ট্রবেরি তুলছিলেন। এসময় কুপ থেকে পানি তোলার সময় একদল মুসলিম নারীর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তারা বলছিল পানি পবিত্র নয় কারণ একজন খ্রিস্টান নারী তা স্পর্শ করেছেন।
এর কদিন পরই ওই নারীরা দাবি করেন আসিয়া নবী মোহাম্মদকে ব্যঙ্গ বা উপহাস করেছেন। এরপর একদল তাকে ধাওয়া দেয়।
“তারা মাঠে যায় এবং তাকে প্রহার করে। তার পোশাক ছিঁড়ে ফেলে। আমাদের সামনেই প্রহার করে,” বলছিলেন আসিয়ার ১৪ বছর বয়সী কন্যা এশাম।
আসিয়ার ঘটনা আবারো দেশটিতে ব্লাসফেমি আইন সংস্কারের বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও বিপজ্জনক বিষয় বলে অনেক রাজনীতিকই এ বিষয়টিকে এড়িয়ে চলেন।
পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসির দেহরক্ষীর হাতে নিহত হয়েছিলেন কারন তিনি আসিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তার খুনি এখন পাকিস্তানে অনেকের কাছেই একজন বীর।
এমনকি এ ধরনের মামলাগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও বিচারকরাও প্রায়শই হুমকি বা হামলার শিকার হন।
আইনজীবী আসমা জাহাঙ্গীর প্রায় বিশ বছর ধরে এ ইস্যু নিয়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন বাইরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে এমন সম্ভাবনার কারণে আসিয়া বিবির ক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করেন তিনি।
আসিয়ার স্বামী সে কারণেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে বলেছেন, “পাকিস্তান সরকারের কাছে অনুরোধ আইনটি রিভিউ করুন”।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।