সম্পদ হিসেবে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের পণ্যমূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার, এমন একটি চিঠি পেট্রোবাংলাকে দেয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। আর এই চিঠির ওপর ভিত্তি করে তিতাস ও অন্য গ্যাস কোম্পানিগুলো দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।

বুধবার সকালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গণশুনানিতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) প্রস্তাবের মতোই একই হারে বাখরাবাদ আবাসিক খাতে দুই চুলার (ডাবল বার্নার) বর্তমান দাম ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা এবং এক চুলা (সিঙ্গেল বার্নার) ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা করার প্রস্তাব করে।

বাখরাবাদ তাদের প্রস্তাবে জানায়, গত অর্থবছরে (২০১৩-১৪) তারা মুনাফা করেছে ১৩৮ কোটি ৯ লাখ টাকা। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রয়েছে ৬২৯ কোটি টাকা। তবে এতোদিন গ্যাসের কোনো পণ্যমূল্য ছিল না। কিন্তু সরকার প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের

পণ্যমূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করেছে । তাই গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে আদায়কৃত ২৫ টাকার ৫৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও মূসক এবং ৪৫ শতাংশ পণ্যমূল্য হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ায় অর্থযোগান বৃদ্ধি পাবে।

গণশুনানিতে অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘যেহেতু কোম্পানি লাভে আছে সেহেতু দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।’ আর এতোদিন যে ৫৫ শতাংশ হারে শুল্ক-ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছি এগুলো তাহলে কেন দিলাম এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।

অধ্যাপক ড. শামসুল আলম আরো বলেন, ‘যেহেতু গ্যাসের ক্রয় বা উৎপাদন মূল্য, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যয়, সম্পুরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বাড়ানোর প্রস্তাবনা নেই সরকারের। সেহেতু গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এ প্রস্তাব ভিত্তিহীন।’

গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান এআর খান। উপস্থিত ছিলেন, কমিশন সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন, রহমান মুরশেদ ও মাকসুদুল হক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, গণসংহতির জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।