এক কাপ চায়ের দামে মিলছে দুই কেজি ফুলকপি। অবাস্তব নয় সত্যি! এ যেন শায়েস্তা খাঁর আমল ফিরে এসেছে। 

শীতকালীন সবজি শুধু ফুলকপি নয়, বাঁধাকপিতেও একই চিত্র। দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। অন্যান্য সবজির দাম স্থির থাকলেও কৃষকেরা হতাশ। 

টানা অবরোধ ও হরতালে পথে বসেছে গাইবান্ধার ছয় উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের চালাচল, কৃষি সবজি, খামারীদের দুগ্ধ পরিবহন, গো-খাদ্য পরিবহন, সার-কিটনাশক পরিবহনসহ নিত্যপণ্য পরিবহন করতে না পারায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবহন বন্ধ থাকায় এখানকার শীতকালীন শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্য সামগ্রী রাজধানীতে পাঠাতে না পেরে স্থানীয় হাট বাজারে অতি অল্প দামে বিক্রি করছে কৃষকরা। 

মঙ্গলবার সরেজমিন গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ী উপজেলার আড়ৎ ঘুরে দেখে গেছে, শতশত চাষী ফুলকপি ও বাঁধাকপি নিয়ে বসে আছে। রাজধানীসহ বিভন্ন অঞ্চলের ব্যাপারিরা ফুলকপি ও বাঁধাকপিসহ নিত্যপণ্য সামগ্রী না কেনায় চাষীরা আড়তে দুই টাকা দরে কেজি প্রতি বিক্রি করছে। 

সাদুল্যাপুর উপজেলার ফুলকপি চাষী আব্দুল রাজ্জাক মন্ডল জানালেন, তিনি আড়তে ৫ মন ফুলকপি এনে ৮০ টাকা মন বিক্রি করেছেন। ক্ষেত থেকে ফুলকপি তুলে আড়তে আনতে তার খরচ হয়েছে ১৫০ টাকা। এই ফুলকপি অবরোধের আগে তিনগুন বেশি দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন তিনি। লাভ তো-দুরের কথা খরচই উঠবে না। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাঁধাকপি চাষী মোজাফফর হোসেন ও মোসলেম আলী জানান, অন্যান্য বছর বাঁধাকপি আবাদ করে লাভের মুখ দেখলেও এ বছর অবরোধ ও হরতাল থাকায় রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষেতের বাঁধাকপি ক্ষেতেই বিনষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় পাইকাররা প্রতি মন ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরের বেশি নিতে না চাওয়ায় এবং স্থানীয় ভাবে চাহিদার তুলনায় কপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় বড় ধরণের লোকসানের অংক গুণতে হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান মন্ডল জানান, বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির বাজার দর দেখে হতাশ হয়েছি। চাষীদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করা ছাড়া বলার কিছুই নেই।