- হোম
- >
- শিল্প-সাহিত্য
- >
- নিরুপমা অথবা গণতন্ত্রের গল্পগাঁথা
কবিতা
নিরুপমা অথবা গণতন্ত্রের গল্পগাঁথা
আহসান মুন্না
প্রিন্টঅঅ-অ+
গলির এমাথা ও মাথা নিরুপমা দেওয়ালে দেওয়ালে
মাথার এমাথা ও মাথা নিরুপমা
আকাশের এমাথা ও মাথা কেবলই নিরুপমা
আমি একনিষ্ঠ ভিক্ষুক নিরুপমার মন্দিরে
ওর ব্যালকনির রেলিংয়ে বসা ডানা ভাঙা কাকটা,
কখনও কখনও সদয় হলে অবহেলে উড়িয়ে দেয় না ।
মাঝেমাঝে ছুটতে থাকা রিকশায় মুচকি হাসি
মনে করিয়ে দেয়, ও আমার হলেও হতে পারতো
তবুও রিকশায় আমার জায়গা হয় না
আমি মহল্লার হাউকাউ ছেলে
মারামারি করে মাথা ফাটাতে পারি
পছন্দ হলেই ছিনিয়ে নিই মুঠো ফোন স্পর্ষ পর্দার আলো অতি মনোহর
বড় রাস্তার মাথায় ঢাউস বিলবোর্ডে সালাম দেওয়া লোকটা কে আমার পীর মনে হয় ।
আমি তার মত সুদর্শণ এপার্টমেন্ট পেতে চাই
পেতে চাই ইলিশ রঙের গাড়ি, গাবদাগোবদা হাসিখুশি বউ
আমিও চাই সাব ইনিসপেক্টর আমাকেও সালাম দিক, ঢেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়াক
যেমন দিয়েছিলো এই রহস্যময় লোকটাকে, যেদিন আমাকেও আটকে রেখেছিলো গরাদের ভিতর
দশটা গোলাপী বড়ির সাথে
রহস্যময় লোকটা আমাকে রহস্যময় ভাবে বের করে আনে, জড়িয়ে নেয় আরো রহস্যের ভিতরে
আমারও রহস্যময় হতে ইচ্ছা করে
সবার ভয় গায়ে মেখে হাসতে মন চায়
তবুও কামিনীগাছটার পাশের দোতলা ব্যালকনিতে নিরুপমা
ওর দৃষ্টিতে উড়ে গেলে কাকটা, কেন যেন মনে হয় রহস্যটা ও পছন্দ করে না, সহজ সহজ সব গল্প খুঁজে
নিরুপমা নিরুপমা নিরুপমা
রহস্যময় লোকটার কথায় নিউমার্কেট থেকে কিছু সহজ বান্ডেল আনতে গেলে
হটাৎ নিরুপমা কে দেখি
একটা নীল নীলাভ জামদানী শাড়িকে উল্টে পাল্টে গায়ে মাখতে, বারবার গন্ধ শুকতে ।
পরে আবার অসহায়ের মত চলে যেতে দেখি বারবার চোখ ফেরাতে ফেরাতে
মুহূর্তের জন্য নীল শাড়িটাকে আমার পৃথিবীর একমাত্র শত্রু মনে হয়
ও চলে গেলে দোকানটায় ঢুকে আঠারো হাজার সংখ্যাটা একটু বেশিই কানে বাজে
তাই আমি অপেক্ষা করবো ভেবে চলে আসি ।
ফিতায় বাঁধা চুল যেমন আস্তে আস্তে খোঁপার দিকে এগিয়ে যায়
আমার পকেটের কাগজগুলোও এগিয়ে আঠারো হাজারের পথে
যখন আর চার হাজার টাকা কোন ভাবেই হচ্ছিলো না
তখন দেশে আসে গণতন্ত্র গণতন্ত্র খেলা
রহস্যময় লোকটা আমাকে বোঝাতে উদ্যত হলে তার কথা আমার অসময়ের নিকোটিনের মত বিস্বাদ বিস্বাদ লাগে
পাঁচ হাজার টাকা শুনতে পেয়ে আমি আনন্দে নেচে উঠি
আমি চিনি না গনতন্ত্র, তন্ত্র মন্ত্র রাষ্ট্রযন্ত্র
আমি শুধু চিনি নীল কাঁচের চুড়ি, জামদানী নীল আর নিরুপমা
তাই আমি আনন্দিত শরতের আকাশের মত নির্বিকার ভাবে হাতে নিই একটা পেট্রোলের বোতল
ছুড়ে মারি সামনের চলন্ত বাসটার গায়ে
হটাৎ জানলা ভেঙে আসে একটা আগুন মাখা শরীর
অবাক হয়ে লক্ষ্য করি মেয়েটা নিরুপমা
তখন ব্ল্যাংক পয়েন্ট থেকে রাষ্ট্র যন্ত্রের উত্তপ্ত বুলেট বুক পকেটের টাকা গুলো রঞ্জিত হয়
যেমন অভিমানী কিশোরী রাঙায় তুলতুলে পা অভিমানী আলতায় ।
আমি তবু এগিয়ে যাই, আজন্ম সাধে জড়িয়ে ধরি নিরুপমাকে
সহমরণের স্পৃহায়
পুড়ে যায় জামদানী নীল, নিরুপমা, পুড়ে যাই আমি
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।